আজ সকালে নিজ নিজ বাসভবন থেকে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং মদন মিত্রকে নিজ বাস ভবন থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এরপরই চার্জশীট পেশ করা হয় এবং ব্যাঙ্কশাল কোর্টে শুনানি শুরু হয়। শুনানি শুরুর আগে থেকেই আশা ছিল তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের ভেতরে। সেই সম্ভবনা সত্যি করে অন্তর্বর্তী জামিন পেয়ে গেলেন নারদা কাণ্ডে সোমবার সকালে অ্যারেস্ট হওয়া চার জনেই।
নারদা কাণ্ডে সকালে ফিরহাদ, সুব্রত, মদন, ও শোভনের গ্রেফতারির জেরে রাজ্যে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।নিজাম প্যালেসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় তারা। সন্ধ্যায় ব্যক্তিগত ৫০ হাজার টাকার বন্ডে এদের জামিন মঞ্জুর হয়েছে। যদিও এই জামিনের সিদ্ধান্তের পালটা সিবিআই হাইকোর্টে আবেদন করবে জানাচ্ছে সূত্র।
নারদা কাণ্ডে সিবিআই- এর গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের দুই বর্তমান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ও সদ্য নির্বাচিত বিধায়ক মদন মিত্র এবং প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদনের শুনানি শুরু হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে। শাসক দলের নেতাদের হয়ে এ দিন আদালতে সওয়াল করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। শুনানির শেষে বিচারক গোটা ঘটনায় চার্জশিট পেশ হলেও কেন গ্রেফতার করা হল, এই প্রশ্ন তোলেন।
করোনা আবহে এই মামলা ভার্চুয়ালি চলেছে। সিবিআইর আইনজীবী এই চার জনকে জেল হেফাজতে নেওয়ার জন্যে আবেদন জানান। কিন্তু বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায় সিবিআই-এর কাছে পাল্টা প্রশ্ন করেন, চার্জশিট যখন তৈরী হয়ে গিয়েছে তখন গ্রেফতারের কি প্রয়োজন? চার্জশিট একবার তৈরী হয়ে গেলে এখন তো শুধুমাত্র আদালতে বিচার চলতে পারে। কিন্তু কিছু জেরা করা তো থাকতে পারে না। তাহলে কোন ভিত্তিতে গ্রেফতার? এই প্রশ্ন তোলা হয় আদালতের তরফ থেকে।
সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, অনলাইনে রুজু করা এই মামলায় মোট ৪৮ পাতার চার্জশিট জমা দেওয়া হল। আদালতে শাসক দলের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বর্তমানে সমগ্র কলকাতার কোভিড পরিস্থিতি দেখভাল করছেন ফিরহাদ হাকিম। এই অবস্থায় ফিরহাদকে অ্যারেস্ট করা হলে পুরো কলকাতা কোভিড মোকাবিলায় দিশাহীন হয়ে পড়বে। এটা হতে পারে না। আদালতে তিনি আরও সওয়াল করেন, মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতার করা হল না কেন? রাজ্যপাল কে লক্ষ করেই শাসক দলের আইনজীবী দাবি করেন, রাজ্যপালের কোনও এক্তিয়ার নেই গ্রেফতারির অনুমতি দেওয়ার। রাজ্য যা সুপারিশ করবে সেটাই তিনি অনুমতি দিতে পারেন। যারা অ্যারেস্ট হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তে সহযোগিতা না করার কোনও রকম অভিযোগ নেই। তাহলে গ্রেফতার কিসের কারণে? প্রশ্ন তোলেন কল্যাণ। এরপর ধোপে টিকতে পারেনি সিবিআই-এর যুক্তি। জামিন পেয়ে যান ফিরহাদ, মদন, সুব্রত, এবং শোভন ৪ জনেই।