মা-সন্তানের সম্পর্ক জন্মের আগে থেকেই সুদৃঢ় হয়, জন্ম থেকেই নয়। তাই সন্তান জন্ম দেওয়ার পর নবজাতক শিশুর মুখ দেখার প্রচণ্ড ইচ্ছা প্রত্যেক মায়েরই থাকে। এমতাবস্থায় জন্ম নেওয়া শিশুটি যদি কয়েক মুহূর্ত মায়ের চোখের এদিক ওদিক হওয়ায় ঘটে যায় বড় বিপত্তি, তাহলে সেই ঘটনা চাঞ্চল্যকর তো বটেই। ঠিক একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে আসামের বারপেটা জেলার একটি হাসপাতালে। হাসপাতাল ভুল করে এক সদ্যোজাত শিশুকে তার আসল মায়ের পরিবর্তে অন্য মহিলার কাছে হস্তান্তর করে দেয়। এক-দুই দিন নয়, তিন বছর ধরে সেই শিশুটি অন্য মহিলার কোলে ছিল। কিন্তু নিয়তি অবশেষে শিশুটিকে সত্যিকারের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। জন্মের তিন বছর পর মায়ের জন্য সন্তান যেন আবারও জন্ম নেয়। সন্তানকে দেখে মায়ের চোখে জল চলে আসে।
কিভাবে এই ঘটনা ঘটেছে:
![](https://dainiksangbad.com/wp-content/uploads/2022/06/20140503_4745-1024x683.jpg)
তিন বছর আগে প্রসবের জন্য আসামের বারপেটা জেলার একটি সরকারি হাসপাতালে দুই গর্ভবতী মহিলাকে ভর্তি করা হয়েছিল। নাজমা খানম ও নাজমা খাতুন, ছিল দুজনের নাম। দুজনেই একই ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। একজন মহিলা মৃত সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এবং অন্যজন নাজমা খানম একটি সুস্থ শিশুর জন্ম দেন। তবে প্রসবের চার ঘণ্টা পর হাসপাতালের কর্মীরা নাজমা খানমের শিশুটিকে অন্য নারী নাজমা খাতুনের হাতে তুলে দেন। অপর এক সদ্যোজাতর দেহ নাজমার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই নারীর নামের মিলের কারণেই এমন অদলা বদলি হয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনার প্রকাশ যেভাবে হয়:
অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন, নাজমার পরিবার দাবি করেছিল যে নাজমা একটি সুস্থ শিশুর জন্ম দিয়েছে এবং শিশুটি মারা যায়নি। তিন দিন পরে, পরিবার হাসপাতালে প্রসব করা মহিলাদের তালিকা পরীক্ষা করে। দেখা যায় তালিকায় দুই নারী নাজমা খানম ও নাজমা খাতুনের নামের মিল রয়েছে। দুজনেই দুটি সন্তানের জন্ম দেন। এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এরপর খানম পরিবার বারপেটা থানায় অভিযোগ দায়ের করে এবং পুলিশকে বিষয়টি তদন্ত করার অনুরোধ জানায়।
বারপেটা থানায় ১২০ (বি) ও ৩৬৩ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ২০২০ সালের ৮ই অক্টোবর তারিখে বারপেটা আদালতে একটি আবেদন করেন। সেই ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এরপর আদালতের নির্দেশে শিশুটিকে তার আসল মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, দুই নারীর নাম একই হওয়ায় ভুলবশত ঘটনাটি ঘটেছে।