আসতে চলেছে তালিবান শাসন। আর তালিবানরা কখনোই মেয়েদের পড়াশুনা করা কে ভালো চোখে দেখেনি। প্রায় বছর ২০ আগে আমেরিকার দ্বারা উৎখাত হওয়ার সময়ে এক মেয়েদের স্কুলের সব নথিতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল তালিবান। যাতে কিছু মেয়ে যে পড়াশুনা করেছে সেরম কোনো প্রামাণই না থাকে।
আবারও তালিবান ফেরার আগ দিয়ে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। তবে এইবারে মেয়েদের স্কুল পড়ুয়াদের সব নথি পুড়িয়ে ফেলা হল তাদের সব লেখাপড়ার রেকর্ড় নষ্ট করে দেওয়ার জন্য নয়, বরং তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই।
আফগানিস্তানের একটি মাত্র মেয়েদের বোর্ডিং স্কুলের সমস্ত ছাত্রীর নথি পুড়িয়ে নষ্ট করে দিলেন স্কুল অব লিডারশিপ আফগানিস্তান (School of Leadership Afghanistan) বা সোলা (sola) -এর প্রিন্সিপ্যাল শাবানা বাসজি রাসিখ। কুড়ি বছর আগে ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়ার আগে তালিবানরা নথিতে আগুন দিয়ে যেসব পড়ুয়াদের পড়াশুনার প্রমাণ লোপাট করেছিল তার মধ্যে ছিল প্রিন্সিপ্যাল রাসিখের নথিপত্রও।
তাই তালিবানরা ক্ষমতায় এসেই পড়াশুনা করা ছাত্রীদের খুঁজে বের করে যদি অত্যাচার চালায় সেই ভয় থেকে স্কুলের ছাত্রীদের যাবতীয় নথি পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেললেন শাবানা বাসিজ রাশিখ। আফগানিস্তানে ছাত্রীদের জন্য একমাত্র বোর্ডিং স্কুলটির বর্তমান অধ্যক্ষা তিনি। রবিবার একটি টুইট করে স্কুলের সব নথি পোড়ানোর ভিডিয়ো আপলোড করে শাবানা লিখেছেন, ‘আফগানিস্তানে মেয়েদের জন্য একমাত্র বোর্ডিং স্কুল সোলা স্থাপিত হওয়ার প্রায় কুড়ি বছর পরে আমি আমার ছাত্রীদের সব নথি পুড়িয়ে ফেলছি। এটা ওদের পড়াশুনার রেকর্ড মুছে দিতে নয়, বরং ওদের পরিবারগুলির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে।’
একের পর এক টুইট করে স্কুলের নথি জ্বালিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে বিশদে লিখেছেন প্রিন্সিপ্যাল রাসিখ।
বিগত প্রায় ২০ বছর ধরে অল্প অল্প করে বহু পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে স্কুল অব লিডারশিপ আফগানিস্তান বা সোলা (SOLA)। অধ্যক্ষা রাশিখ বলেন, আমার লক্ষ্য আফগান মেয়েদের শিক্ষাকে পুনরুজ্জীবিত করা। কারণ সাধারণ ঘরের আফগান মেয়েরা এই দেশ ছেড়ে পালাতে পারবে না। শিক্ষাই ওদের একমাত্র আশার আলো। আবারও ফিরে এসেছে তালিবান। তাই ফের সেই পুরনো নারী পরাধীনতার যুগ ফিরে আসবে কিনা সেই আতঙ্কেই রয়েছি।
তিনি বলেন, ফের মেয়েদের শিক্ষার উপর আঘাত নেমে আসতে চলেছে। তালেবান সরকার গঠিত হলে মেয়েদের উন্নতি এবং শিক্ষা কতদূর এগোবে তা নিয়ে সংশয় আছে। ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভাবলে বড় অসহায় বোধ হয় বলে তিনি জানান।