পাঞ্জাবের খান্না পুলিশ একটি গ্যাং-এর পর্দা ফাঁস করেছে, যেটি দীর্ঘদিন ধরে শ্মশানে মৃতদের অস্থিভস্ম বিক্রির ব্যবসা করছিল। অস্থিভস্ম-এর বিনিময়ে মোটা অঙ্কের দাম নিত এই চক্র। অভিযোগ পাওয়ার পর এই চক্রটির উপর পুলিশের অভিযান চালানো হয়। খান্না পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে, যারা শ্মশানের কর্মচারী ছিল। উভয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর, চক্রের বাকি সহযোগী ও তান্ত্রিকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
তথ্য অনুযায়ী, ঘটনাটি পাঞ্জাবের খান্নার। শ্মশানের দুই কর্মচারীকে আটক করেছে পুলিশ। উভয়েই শ্মশানে মৃতদের ছাই, অস্থি সংগ্রহ করে তান্ত্রিক শিক্ষার জন্য তান্ত্রিকদের কাছে বিক্রি করত বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেছেন এক ব্যক্তি যার নাম রিংকু। এই ঘটনায় অভিযোগকারী রিংকু স্টিং অপারেশনও করেছিলেন।
রিংকু বলেছিলেন যে তাঁর ১৮ বছর বয়সী ছেলে দীপক ৩রা নভেম্বর ২০২১-এ মারা গিয়েছিল, যার শেষকৃত্য খান্না শ্মশানে করা হয়েছিল। শেষকৃত্য শেষে তিনি রীতি অনুযায়ী ছেলের অবশিষ্ট থেকে একটি হাড় বের করেন, যা একটি খামবন্দী করে মাটিতে দাফন করে আসেন। এরপর ৫ই নভেম্বর তিনি স্বজনদের নিয়ে শ্মশানে ছেলের ছাই সংগ্রহ করতে গেলে ছেলের হাড় নেই। এতে তিনি বিস্মিত হন।
এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানান রিংকু। তিনি শ্মশান এবং আশেপাশে স্থাপিত সিসিটিভিও পরীক্ষা করেছিলেন, কিন্তু কিছুতেই কিছুর খোঁজ মেলেনি। বাস্তবতা জানতে তিনি নিজে ঘটনার স্টিং অপারেশন করার চেষ্টা করেন। শ্মশানের ইনচার্জ নির্মল সিংয়ের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। একদিন নির্মল সিং এক যুবকের হাড় এর বিনিময়ে কয়েক হাজার টাকা দিতে বলে। টাকার লোভে নির্মল সিং ২৭ বছর বয়সী মৃত যুবকের হাড় রিংকুকে দেন এবং তার কাছে ২১ হাজার টাকা দাবি করেন।
এর পর রিংকু তাকে জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারে যে এই গ্যাংটি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। নির্মল সিং মৃতের পুরো শরীরের হাড় রিংকু কে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে দিতে প্রস্তুত ছিলেন। রাতে তাকে শ্মশানে ডেকে জাদুকরী করাতেও প্রস্তুত ছিল সে। সব মিলিয়ে খান্নার এসএসপির কাছে অভিযোগ করেন রিংকু। এসএসপি মামলা নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। এসএসপি রবি কুমার বলেছেন যে রিঙ্কুর বক্তব্যের ভিত্তিতে শ্মশানে নিযুক্ত নির্মল সিং ওরফে নিমহা এবং তার ছেলে জাসবিন্দর সিং সহ অজ্ঞাত তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্যাংয়ের অন্যান্য সদস্য ও তান্ত্রিকের খোঁজ চলছে।