গত প্রায় ৭ দিন ধরেই রাত বাড়লেই ছাদ থেকে ভেসে আসছে ‘অস্বাভাবিক ভৌতিক শব্দ’। তিষ্ঠতে দিচ্ছে না ভূতের উপদ্রব, ঠিক এমনটাই দাবি করলেন দুর্গাপুরের বিধাননগরে অবস্থিত একটি নার্সিং কলেজের মেয়েদের হস্টেলের আবাসিকদের একাংশের। এই ভূতের অত্যাচার নিয়ে তদন্তের দাবিতে সোমবার বিকেল ৪টে থেকে এক ঘণ্টা সেই উপদ্রুত হস্টেলের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন নার্সিং পড়ুয়ারা। তাঁদের বক্তব্য, আগামী ৯ অগস্ট থেকে তাদের নার্সিং এর প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু। এই ভৌতিক কান্ড কারখানায় পরীক্ষার প্রস্তুতি সেইভাবে নিতে পারছেন না তাঁরা। এ দিকে, হস্টেল কর্তৃপক্ষের জানিয়েছেন, এমন কোনো কিছুই হয়নি , পরীক্ষা পিছানোর জন্যই এ সব রটাচ্ছেন আবাসিক ছাত্রীদের একাংশ।
জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিধাননগরের অবস্থিত ওই বেসরকারি হস্টেলে নাকি রাত হলেই নাকি ভেসে আসে বিভিন্ন ভৌতিক শব্দ। এমনটাই জানিয়েছে হস্টেলের আবাসিকরা। এর ফলে রীতিমতো ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে ওই বেসরকারি হস্টেলে থাকা ছাত্রীরা। গত এক সপ্তাহ ধরে হস্টেল চত্বরে সন্ধ্যার হলেই নানান শব্দ শোনা যায় বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত দুর্গাপুরের বিধাননগরের এই স্থানেই রয়েছে বিভিন্ন নামিদামি স্কুল কলেজ এবং হস্টেল। এই হোস্টেলের আবাসিক ছাত্রীরা এবং ছাত্রীদের অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, হস্টেল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। হস্টেলের থাকা আবাসিকদের দাবি, অন্য জায়গায় তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে বা তাঁদের বাড়ি যেতে দিতে হবে।
এই হস্টেলে থাকেন সব মিলিয়ে ৯৮ জন ছাত্রী। দুর্গাপুরের শোভাপুরের পাশে রয়েছে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এই সমস্ত ছাত্রীরা সেখানে নার্সিং ট্রেনিং করেন। ভৌতিক কান্ডের প্রতিবাদে সোমবার দুপুর থেকে হস্টেলের মধ্যেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়ারা এবং তাঁদের অভিভাবকরা। যদিও পুলিশি হস্তক্ষেপে সেই বিক্ষোভ উঠে যায়।
ওই হোস্টেলের এক পড়ুয়া
জেসমিন পারভিন জানান, ‘‘ছাদে জুতোর ছাপের ছবি পর্যন্ত রয়েছে আমাদের কাছে! অথচ, যখন আমরা অভিযোগ করতে যাচ্ছি তখন আমাদের সমস্ত বক্তব্য হেসে উড়িয়ে দেওয়া হয়।’’ বর্ণালী মণ্ডল নামে আর এক আবাসিক বলেন, ‘‘হয় আমাদের হস্টেল পরিবর্তন করে দিতে হবে। তা না হলে, কেন এই সব ঘটনা হচ্ছে, তা তদন্ত করে খুঁজে বার করতে হবে।’’
এ দিকে, হস্টেলের ‘ইন-চার্জ’ শিউলি মুখোপাধ্যায়ের জানান, ‘‘কিছুদিন আগে অবধি সবই ঠিক ছিল। কিন্তু অনলাইনের জায়গায় অফলাইনে পরীক্ষা হবে, এই ঘোষণা হওয়া মাত্রই এই সব ভূতের উপদ্রব এর কথা শোনা যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে করোনা আবহে অনলাইনে পড়াশোনা করে আসছেন পড়ুয়ারা। হঠাৎ করেই শুনেছেন অফলাইনে পরীক্ষা হবে। অফলাইন পরীক্ষার প্রস্তুতি হয়তো সেইভাবে নিয়ে উঠতে পারেননি ওঁরা। তাই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার উদ্দেশে এই সব রটিয়ে বেড়ানো হচ্ছে।’’ পুলিশ জানায়, তাঁদের কাছে এই বিষয়ে কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ এলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করবে।