কোভিড-১৯ মহামারির উৎস কি? করোনা ভাইরাস (Coronavirus) কোথা থেক মানুষের শরীরে বাসা বাঁধল আর কীভাবেই বা তা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে মহামারী রূপে ছড়িয়ে পড়ল তা নিয়ে ধন্ধে বিশ্বের তাবড় তাবড় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বলা হয় চীনের উহানে (Wuhan China) বন্যপ্রাণী কেনাবেচার মার্কেট থেকেই প্রাদুর্ভাব হয়েছিল এই রোগের। কিন্তু এতদিন সন্দেহের তালিকায় ছিল সাপ বা বাদুড় অথবা সামুদ্রিক কোনো মাছ। মনে করা হচ্ছিল এরাই মারণ করোনা ভাইরাসের বাহক। কিন্তু এবার প্রকাশ্যে এল এমন এক তথ্য যেখানে বলা হচ্ছে সাপ বা বাঁদুর নয়, বাংলার বেশ পরিচিত কিন্তু লুপ্তপ্রায় একটি প্রাণীর দেহ থেকেই মানব শরীরে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস।
নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এক প্রতিবেদন যেখানে বলা হচ্ছে সম্ভবত চিনের ইউহান থেকে ছড়িয়ে পড়া যে করোনা ভাইরাসে সারা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেটির উৎস প্যাঙ্গোলিন নামক একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী।
প্যাঙ্গোলিন হচ্ছে এমন একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী না পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি চোরাই পথে পাচার হয়। চীনের উহানে মাংস বিক্রির মার্কেটে মাছ এবং নানা পশুপাখি ছাড়াও বিরল বন্যপ্রাণীর অবৈধ ও অনিয়ন্ত্রিত কারবার রয়েছে। সেই বাজারে কেনাবেঁচা হয় প্যাঙ্গোলিনও। আর এই প্যাঙ্গোলিনকেই সন্দেহের চোখে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। মনে করা হচ্ছে চীনের বাজারে চোরাই পথে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা এই স্তন্যপায়ী প্রানীটির দেহে মিলেছে এমন একটি ভাইরাস যার আরএনএ বিন্যাসের (RNA structure) সাথে কোভিড-১৯ এর ভাইরাসের বিন্যাস ‘ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।’ প্রায় ৯৯ শতাংশ মিল পাওয়া গিয়েছে দুই ভাইরাসের মধ্যে। এমনটাই বিশ্লেষণ করে পেয়েছে গুয়াংজু প্রদেশের ‘সাউথ চায়না এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটি’র গবেষকরা।
প্যাঙ্গোলিন নামের প্রাণীটিকে বাংলায় অনেকেই বনরুই বলে চেনেন। এই প্রানীটি যেমন চীনে খাদ্য হিসেবে যেমন ব্যবহৃত হয়, তেমনি ব্যবহৃত হয় নানা চীনা আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে। ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে প্যাঙ্গোলিনের গায়ের আঁশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে এবং তাদের মাংসও চীনে বেশ উপাদেয় একটি খাবার তাই এটির বেশ চাহিদা রয়েছে। যদিও বন্যপ্রাণী কেনা বেচার সেই বাজার বন্ধ করে দিয়েছিল চীনা প্রশাসন তড়িঘড়ি।