গোটা গ্রাম খুঁজলেও একটিও পাকা বাড়ি চোখে পড়বে না। চারিদিকে শুধুই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাটির ঘর। পাকা বাড়ি করার যে সাধ্য নেই, এমন পরিস্থিতিও নয় গ্রামবাসীদের। তা হলে? আসল ব্যাপার হল বিশ্বাস। আর এই বিশ্বাস থেকেই আজও বাস করছেন কুঁড়ে ঘরে, গ্রামবাসীরা। কোথাও খড়ের কোথাও বা টালির ছাউনি। এই গ্রামের নাম দেবমালি যা রাজস্থানের মরুপ্রান্তরে অবস্থিত। দেব নারায়ণের উপাসক গ্রামবাসীরা। তাই গ্রামবাসীদের বিশ্বাস তাঁরা পাকা ঘরে বসবাস করুন দেবতা চান না । কারণ, এর আগে পাকা ঘর বানানোর চেষ্টা করেছিলেন গ্রামের একজন, কিন্তু তা ধসে পড়ে যায়। এর পর থেকে গ্রামবাসীদের মনে একেবারে স্থায়ী হয়ে গিয়েছে কুঁড়ে ঘরে বাস করার ধারণা।
বহু জন পাকা বাড়ি বানিয়েছেন অন্য গ্রামে বটে, তবে তাঁরা এখনও কুঁড়ে ঘরেই বাস করেন দেবমালি গ্রামে। এমনকী, গোটা গ্রামে কোথাও মিলবে না গ্যাস বা কয়লার উনুন। আজও রন্ধনকার্য কাঠের জ্বালানি দিয়েই চলে। গ্রামে ইলেক্টিক লাইন ঢুকতে দেননি গ্রামবাসীরা, বিজলি বাতিতেও দেবতাদের অসুবিধা হতে পারে বলে। সূর্য ডুবলেই এখানে আজও ঘরে ঘরে জ্বলে লন্ঠন বা কুপির আলো।
এতদিন ধরে চলে আসা নিয়মের বাইরে বের হন না নবীন প্রজন্মও। সকলেই চাষি দেবমালি গ্রামের মানুষরা। জীবন চলে কৃষিকর্মের কাজ করে। কিন্তু, কোনও চাষের জমি নেই কোনও গ্রামবাসীর নামেই। দেব নারায়ণের নামে সমস্ত জমি রেজিস্ট্রার্ড আছে। গ্রামবাসী নিজেদের মধ্যে জমি চিহ্নিত করে দিয়েছেন প্রত্যেক পরিবারের। গ্রামবাসীরা জমিতে চাষ করেন সেই অনুযায়ী। দেবমালি গ্রামে ৮০টি পরিবারের বাস। এই গ্রামের নিয়ম এতটাই কড়া যে, গ্রামে কোথাও আমিষ খাবার হয় না আজও। সকলেই নিরামিশাষী গ্রামবাসীরা। এমনকী, এই গ্রামে মদ্যপানও নিষিদ্ধ।