এই সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে সারাদেশে অনেক ধরনের মশাবাহিত রোগ দ্রুত বাড়তে থাকে, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগগুলো বেশ প্রাণঘাতী হতে পারে, এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারাদেশে ডেঙ্গুতে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলেও অত্যধিক চিন্তার কোনো কারণ নেই, কিছু সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখলে এ ধরনের ঝুঁকি কমানো যায়। যদিও সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা না হলে সমস্যা ও রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়।
ডেঙ্গু প্রতি বছর দেশের একটি বিশাল জনসংখ্যাকে প্রভাবিত করে। প্রতি বছর ডেঙ্গু ছড়ানো থেকে বাঁচতে মানুষকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অনুশীলন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সংগৃহীত জলকে ডেঙ্গু জ্বর ছড়ানো মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জলাবদ্ধতা রোধ করে ডেঙ্গু মশা কমাতে পারেন। তবে, যদি আপনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তবে অসুস্থতার সময় বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত, সঠিক ডায়েট এবং সঠিক চিকিত্সা দ্রুত সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে মনে করা হয়।
আসুন জেনে নেই ডেঙ্গু হলে কী কী যত্ন নেওয়া উচিত।
ডাক্তাররা কি বলেন?
চিকিৎসকরা বলছেন, রোগীরা সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেলে ডেঙ্গু নিরাময়যোগ্য। কিছু মানুষের মধ্যে কম প্লেটলেটের মতো গুরুতর অবস্থা দেখা দেয়। সাধারণত সময়মত পরিস্থিতি চিনতে ভুল করলে এই ধরনের সমস্যা হয়।
কেউ কেউ ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার পর অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করেন, কিন্তু মনে রাখবেন যে কোনো ভাইরাল জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক কোনো কাজে আসে না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়ার কারণে অবস্থার অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাই সবসময় সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডেঙ্গু হলে কী করবেন?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনার যদি কয়েকদিন ধরে অবিরাম উচ্চ জ্বর বা পেটের সমস্যা থাকে তবে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন এবং এটি পরীক্ষা করান। ডেঙ্গু ধরা পড়লে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন।
যতটা সম্ভব বিশ্রাম নিন। জ্বর নিয়ন্ত্রণে ও ব্যথা উপশমের জন্য প্যারাসিটামল খান। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাবেন না। অ্যাসপিরিন বা বুপ্রোফেন খাবেন না। শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন। অতিরিক্ত ইলেক্ট্রোলাইট গ্রহণ লক্ষণগুলিকে গুরুতর হতে বাধা দেয়। লক্ষণগুলো হালকা হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ঘরে বসে চিকিৎসা নিন।
ডেঙ্গু হলে কী করবেন না?
ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস এবং হাইড্রেশনের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। কিছু খাবার ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গকে আরও খারাপ করতে পারে। তৈলাক্ত খাবার, ক্যাফেইন, কার্বনেটেড পানীয়, মশলাদার খাবার এবং চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তাদের মধ্যে ডেঙ্গুর উপসর্গের তীব্রতা বেশি, তাই এমন খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন যা প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল বলে পরিচিত।
ডেঙ্গু মেডিকেল ইমার্জেন্সি
ডেঙ্গুর উপসর্গ হঠাৎ করে তীব্র আকার ধারণ করতে পারে, একে মেডিকেল ইমার্জেন্সি বলা হয়। এসব পরিস্থিতিতে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছান। আপনি যদি নাক বা মাড়ি থেকে রক্তপাত, অবিরাম বমি, রক্তাক্ত বমি, কালো মল, পেটে ব্যথা, অতিরিক্ত তৃষ্ণা (শুকনো মুখ), জ্বরের সাথে শ্বাস নিতে অসুবিধার মতো সমস্যাগুলি অনুভব করেন তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
দ্রষ্টব্য: এই নিবন্ধটি নানা মেডিকেল রিপোর্ট এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। দৈনিক সংবাদ প্রদত্ত তথ্যের জন্য কোনো দায় নেয় না। উপরের নিবন্ধে উল্লিখিত সম্পর্কিত রোগ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।