সাধারণ বেতনভুক সরকারি কর্মী তিনি। শিক্ষা দফতরে কেরানী পদে চাকরি করেন। এদিকে তাঁর বাড়ি থেকেই উদ্ধার হল নগদ ৮৫ লক্ষ টাকা। শুধু নগদ টাকাই নয়, ওই সরকারি কেরানীর বাড়ির অন্দরসজ্জায় যে জিনিসগুলি ব্যবহৃত হয়েছে, তার বাজার দর কমপক্ষে দেড় কোটি টাকা। তবে এখানেই শেষ নয়, জানা গিয়েছে, ওই কেরানীর কাছে ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। একজন অতি সাধারণ সরকারি অফিসের কেরানীর কাছে এত টাকা কোথা থেকে এল, তা জানতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স উইংয়ের আধিকারিকেরা।
আয় বহির্ভূত সম্পত্তি নিয়েই সম্প্রতি তদন্তে নেমেছে মধ্য প্রদেশ পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স উইং। বুধবার তারা ভোপালের এক সরকারি কেরানীর বাড়িতে হানা দেন। হিরো কেশওয়ানি নামক ওই চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগের আপার ডিভিশন ক্লার্কের বাড়িতে নগদ টাকা লুকানো রয়েছে, এই খবর আগেই পেয়েছিল পুলিশ। সেই সূত্র ধরেই বুধবার তল্লাশি চালান তাঁরা। বাড়ি থেকে যা যা উদ্ধার হয়েছে, তা দেখে চক্ষু চড়কগাছ আধিকারিকদের।
জানা গিয়েছে, ৫০ হাজার টাকার বেতনভুক্ত ওই সরকারি কর্মীর বাড়ি থেকে নগদ ৮৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়িতে রাখা সুটকেস থেকে শুরু করে আলমারি, ঘরের বিভিন্ন কোণায় সেই টাকা লুকানো ছিল। বিপুল পরিমাণ ওই টাকা গুনতে হিমশিম খান আধিকারিকেরা। আনতে হয় নোচ গোনার মেশিন। দুপুর থেকে মধ্য়রাত অবধি চলে টাকা গোনা। এছাড়াও তাঁর বাড়ি থেকে একাধিক সম্পত্তির দলিল উদ্ধার হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য চার কোটি টাকা। তবে এখানেই শেষ নয়, তাঁর বাড়ির অন্দরসজ্জার জন্য যে জিনিসপত্রগুলি ব্য়বহার হয়েছে, তার বাজারদরও আনুমানিক ১.৫ কোটি টাকা।
এদিকে, তদন্তে বাধা দিতে হিরো কেশওয়ানি প্রথমে আধিকারিকদের ঘরে ঢোকা থেকে আটকানোর চেষ্টা করেন, ধাক্কা মারেন। শেষ অবধি বিফল হয়ে তিনি নিজেই বাথরুম পরিষ্কারের ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে হামিদিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি স্থিতিশীল রয়েছেন। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাঁর।
তদন্তকারী আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, একজন সাধারণ কেরানীর বিলাসবহুল বাড়ি দেখেই প্রথম সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। পরে বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর নিশ্চিক করেই গতকাল তারা হানা দেন। বিকেলের মধ্য়েই ৮৫ লক্ষ টাকারও বেশি নগদ অর্থ উদ্ধার হয়। এছাড়াও একাধিক স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির কাগজ পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ আনুমানিক ৪ কোটি টাকা। অধিকাংশ জমি ও সম্পত্তিই তিনি নিজের স্ত্রীর নামে কিনেছিলেন, যিনি গৃহবধূ। এছাড়া একাধিক পরিবারের সদস্যের অ্যাকাউন্টেও লক্ষাধিক টাকা ট্রান্সফারের প্রমাণ মিলেছে।