ভারতীয়রা সাধারণত বাড়ির ভিতরে চটি পরে না। বহু ক্ষেত্রে এমন করার কারণ একটি বিশ্বাস যে ঘরের মধ্যে লক্ষ্মীর বাসস্থান। এটি বিবেচনা করে ঘরের বাইরেই চপ্পল ও জুতা খুলে রাখা হয়। এছাড়াও মন্দির ও অন্যান্য ধর্মীয় স্থানের অভ্যন্তরে জুতা ও চপ্পল নিষিদ্ধই থাকে। কিন্তু জানেন কি, ভারতে এমন একটি গ্রাম আছে, যেখানে মানুষ ঘরের বাইরেও খালি পায়ে থাকে? হ্যাঁ, ভারতের এই গ্রামের মানুষ জুতা-চপ্পল পরে না। কেউ এ কাজ করলে তার জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে।
আমরা ভারতের তামিলনাড়ুতে অবস্থিত কালিমায়াম গ্রামের কথা বলছি। রাজধানী চেন্নাই থেকে প্রায় সাড়ে চারশো কিলোমিটার দূরে এই গ্রাম। এখানে প্রায় একশত ত্রিশটি পরিবার বাস করে, যাদের অধিকাংশই কৃষক। তারা গ্রামেই কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামের প্রবেশপথে একটি বড় গাছ রয়েছে যেখানে বহু লোক পূজা করে। এই জায়গা থেকে প্রবেশ করলেই পা থেকে জুতা ও চপ্পল খুলে ফেলতে হয়। এটা করার পেছনে রয়েছে গ্রামবাসীদের ধর্মীয় বিশ্বাস।
গ্রামটিকে পবিত্র মনে করা হয়:
ভারতে যেভাবে অনেক লোক বাড়ির ভিতরে চটি বা জুতো পরে না কারণ তারা বাড়িটিকে লক্ষ্মীর আবাসস্থল বলে মনে করে, একইভাবে এই গ্রামের লোকেরা গ্রামের সীমানা শুরু হওয়ার সাথে সাথে বাকি ক্ষেত্রকে ঈশ্বরের বাড়ি বলে মনে করে। যতই গরম রোদ হোক না কেন, রাস্তায় কাউকে জুতা পরতে দেখা যায় না। মানুষ বিশ্বাস করে যে, এ কাজ করলে উপরওয়ালা রাগান্বিত হবেন। বাইরে থেকে কেউ গ্রামের ভিতরে এলে গাছের নিকটে পৌঁছে জুতো খুলে হাতে নিয়ে চলতে হয়।
গ্রামবাসীরা বলেন, তাদের পুরো গ্রামটি একটি মন্দির। যদি কেউ জুতা পরে এই ধর্মীয় স্থানে আসে, তাহলে ভগবান তাকে শাস্তি দেবেন। তার হয় খুব জ্বর হবে বা সে এমন কোন রোগে আক্রান্ত হবে যা নিরাময়যোগ্য নয়। এখানে বসবাসকারী প্রায় পাঁচ শতাধিক লোকের মধ্যে শুধুমাত্র খুব বয়স্ক ব্যক্তিদেরই গ্রীষ্মের মৌসুমে বিকেলে পায়ে জুতা পরতে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাউকে এ কাজ করতে দেখা গেলে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়। গ্রামের এই কঠোর নিয়ম সবাই মেনে চলে।