দিনমজুরি করেন বাবা। টেনেটুনে সংসার চালান। কিন্তু অভাবের সংসারেও চেষ্টা করেন নিজের সাধ্যের বাইরে গিয়ে পরিবারের সকলের সাধ পূরণের। কিন্তু অভাব সব সময় শেষ সাধ পূরণ করার ক্ষমতা দেয় না। কিন্তু এর পরিণতি যে জীবনের সবথেকে দামি জিনিস চলে যাবে তা বোঝেনি ওই পিতার অন্তর।
জানা গেছে গত কয়েকদিন ধরেই সেইভাবে দিনমজুরির কোনও কাজ পাচ্ছিলেন না। এদিকে ছেলের আবদার, এখনই তাঁর ফোনে রিচার্জ করে দিতে হবে। কিন্তু যেখানে সংসারে সেই ভাবে খাওয়া জুটছে না, দু’বেলা দু’মুঠো জোটাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে সেই সময় কিভাবে মোবাইল রিচার্জ করা যাবে। তাই ছেলেকে বলেছিলেন এখন নয় আর কটা দিন পর টাকা আসুক তারপরে করে দেবো রিচার্জ। বাবারে সামান্য কথা যে ছেলে এতো বড় পদক্ষেপ নিয়ে বসবে তা কল্পনাতেও আসেনি কারো।
ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে ঘটেছে।পিটিআই (PTI) এর সূত্র অনুযায়ী মধ্যপ্রদেশের জবলপুর শহরের গোরখপুর এলাকায় আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে এক বাবা তার সন্তানের মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ডেটা প্যাক রিচার্জ করতে না পারায় ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর আত্মঘাতী হয়েছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে। শহরের পুলিশ সুপার (সিএসপি) অশোক শর্মা জানিয়েছেন যে মৃত কিশোরের নাম নিখিল তিওয়ারি। তিনি জানান, সোমবার তার মৃতদেহ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিজের সন্তানকে হারিয়ে শোকে কাতর তার পিতাসহ পরিবার।
পুলিশ সুপার শর্মা বলেছেন যে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে নাবালকটি এই পদক্ষেপ নিয়েছে কারণ তার বাবা ইন্টারনেট অ্যাক্সেসের জন্য গত কয়েকদিন ধরে তার মোবাইল ফোনে ডেটা প্যাক রিচার্জ করতে অক্ষম ছিলেন। তিনি আরো জানান যে মৃতের বাবা একজন দিন মজুর হিসাবে কাজ করেন এবং বর্তমানে যথেষ্ট আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তাই তিনি ইন্টারনেট চালানোর জন্য ডেটা প্যাক রিচার্জ করতে অক্ষম ছিলেন।
জানা গিয়েছে নাবালক ছেলেটি মোবাইল ফোনে গেম খেলায় আসক্ত ছিল। মোবাইল ফোনে রিচার্জ না থাকায় তার অনলাইনে গেম খেলায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছিল। এইজন্যই সে বারবার তার বাবাকে রিচার্জ করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু বাবা না করে দেওয়ায় এমন চূড়ান্ত পদক্ষেপ। প্রসঙ্গত মনোবিদরা বারবার সতর্ক করছেন কিশোর মস্তিষ্কে অনলাইন গেম এর প্রভাব নিয়ে।