কেটে গেছে প্রায় ৯ মাস, কিন্তু এখনও স্বামীর কোনও খোঁজ পাননি স্ত্রী, হবেই হয়ে খুঁজছেন হাওড়া (Howrah) বালটিকুরি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৬৯ বছর বয়সী ‘কোভিড আক্রান্ত’ (Covid Positive) স্বামীর। হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিসের দরজায় কড়া নেড়েও কোনও লাভ হচ্ছেনা। তার স্বামী বেঁচে আছেন কি নেই তাও জানেন না? উত্তরও নেই কারোর কাছে! Zee 24 ঘন্টার এক প্রতিবেদনে এই ভয়ানক খবরটি প্রকাশিত হয়েছে । ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
নারায়ণ চন্দ্র সাহা, উলুবেড়িয়ার (Uluberia) হাটকালী গঞ্জের বাসিন্দার কোভিডের সংক্রমণ (Covid Positive) ধরা পড়ার পর ২০২১-এর মে মাসের ১ তারিখে তাঁকে ভর্তি করা হয় হাওড়া বালটিকুরি হাসপাতালে। পরিবারের লোককে হাসপাতালের তরফে জানানো হয় যে, এবার থেকে রোগীর অবস্থা জানতে পারবেন ফোন মারফত। একটি নম্বরও সেইজন্য দেওয়া হয়। অভিযোগ, সেই নম্বরে তারপর দিন-ই ফোন করা হলে পরিবারের লোককে এই নামে কোনও রোগী হাসপাতালে ভর্তি নেই বলা হয়। একথা শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মত অবস্থা হয় নারায়ণ চন্দ্র সাহার পরিবারের।
পরিবারের লোক তড়িঘড়ি হাসপাতালে পৌঁছন খোঁজ নিতে। অভিযোগ, তাঁদেরকে সেখানে গেলে জানানো হয় যে,কোনও রোগী এই নামের ভর্তি নেই। পাশাপাশি দুর্ব্যবহারও করা হয় তাঁদের সঙ্গে। বারবার স্বামীর খোঁজ (Missing) করেন স্ত্রী নিয়তি সাহা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু কোনওরকম সহযোগিতা করা তো দূরের কথা হাসপাতালের তরফে, অভিযোগ একপ্রকার দুর্ব্যবহার করে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে। অভিযোগ, এরপর বিভিন্ন জায়গায় স্বামীর খোঁজ করে গিয়েছেন স্ত্রী নিয়তি সাহা এই অফিস ওই অফিস করে। কিন্তু নারায়ণ চন্দ্র সাহার কোনও খোঁজ নেই দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস হতে চললেও।
এরপরই নারায়ণ চন্দ্র সাহার খোঁজে ডোমজুড় থানায় মিসিং ডায়েরি করেন মা-ছেলে মিলে। পাশাপাশি চিঠিও পাঠান সরকারি বিভিন্ন দফতর থেকে শুরু করে নবান্ন ও স্বাস্থ্য ভবনে। কিন্তু এখনও তাতেও কোনও খোঁজ মেলেনি। পরিবারের লোক জানিয়েছেন, একটি কমিটি তৈরি করে রিপোর্ট জানানোর কথা তাঁদেরকে বলা হয়েছিল হাওড়া CMOH-এর পক্ষ থেকে। কিন্তু, সেই রিপোর্ট তাঁদেরকে জানানো হয়নি বারবার হাওড়া CMOH-এর সাথে দেখা করলেও। বলা হয়েছে, থানায় রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সবমিলিয়ে স্ত্রী নিয়তি সাহা দীর্ঘ ৯ মাস ধরে স্বামীর খোঁজে হন্যে হয়ে এই অফিস থেকে ওই অফিস গোলকধাঁধার মত ঘুরে চলেছেন। কিন্তু হাওড়া বালটিকুরি হাসপাতালে কোভিডের সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হওয়া স্বামী জীবিত না মৃত? সেটাই স্ত্রীর কাছে এখনও অজানা।