Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
FEATURED ট্রেন্ডিং

নেতাজির জন্মদিনে তিনপুরুষ ধরে বিনামূল্যে চপ খাওয়ানো হয় কলকাতার এই দোকানে, কেন!

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন সারা ভারত বাসীর কাছেই এক আবেগের দিন। কিন্তু এই দিনটা একটু অন্যরকম ভাবে উদযাপন করে উত্তর কলকাতার একটি চপের দোকান। বিধান সরণীর ওপরে হাতিবাগানের কাছে লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ অ্যান্ড সন্স-র চপের দোকান। ১০০ বছর পার হয়ে গেছে এই দোকানের। সুভাষ চন্দ্র বসুর স্মৃতিতে মানুষকে তাঁর জন্মদিন ২৩ জানুয়ারিতে বিনা পয়সায় চপ খাওয়ানো হয়ে আসছে তিন পুরুষ ধরে।

সেই সময়ে ভারতে কায়েম ব্রিটিশ রাজ। ১৯১৮ সালে পরাধীন ভারতের কলকাতা শহরে তেলেভাজার দোকান খোলেন খেদু সাউ। চপের সাথে এই দোকানে মিলত গরমাগরম চাও। অচিরেই এই দোকানের তেলেভাজা স্থান করে নেয় তৎকালীন কলেজ পড়ুয়াদের রস আস্বাদনে। শুধু যে কলেজ পড়ুয়া তাই নয়। এই দোকানে আসতেন স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছাত্ররাও। অর্ডারও আসত এই দোকানে তেলেভাজার। শুধু সাধারন মানুষের বাড়ী থেকেই নয়, বিপ্লবীদের গোপন ডেরা থেকেও আসত এই দোকানের তেলেভাজার অর্ডার। যত্ন সহকারে বিপ্লবীদের সেবায় তাঁদের গোপন স্থানে পৌঁছে যেত তেলেভাজা। তবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে যে ব্যাক্তির নাম এই চপের দোকানের গ্রাহকের তালিকায় জ্বলজ্বল করে তাঁর নাম নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মিটিংয়ে চপ পৌঁছতে গিয়ে একসময় প্রত্যক্ষ বিপ্লবের শরিক হয়ে যায় এই চপের দোকান। তাঁর মাধ্যমেই নিজেদের গোপন ঠিকানা বা তথ্য আদান প্রদান করতেন বিপ্লবীরা। এই ভাবে সান্নিধ্য হয় নেতাজিরও। এ যেন এক পরম পাওয়া।

সময় এগিয়ে চলল নিজের খেয়ালে। ৪১ সালে ভারত ছাড়লেন সুভাষ চন্দ্র বসু। দেশ স্বাধীন করতে ব্রিটিশের নজর এড়িয়ে চলে গেলেন। নেতাজী তখন ব্রিটিশের চোখে ভয়ঙ্কর অপরাধী। তাঁর সমর্থন করা তো রাজদ্রোহীতা। কিন্তু তাও দমলেন না এই কলকাতার চপ ব্যবসায়ী। ৪২ সালে নেতাজির জন্মদিনের দিন পথচলতি মানুষের হাতে ডেকে তুলে দিলেন তাঁর ভাজা গরম গরম চপ। কেক খাওয়ার কথা তখনও শেখেনি বাঙালি। ইংরেজের চোখ এড়িয়ে বিপ্লবের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে চলল তাঁর প্রচেষ্টা। নেতাজী অন্তর্ধান হলেও তাঁর নেতাজী প্রেমে কোনো ছেদ পড়ল না।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ’৪৮ সালে নেতাজির জন্মদিনে এই তেলেভাজা বিলি আর লুকিয়ে চুরিয়ে করার প্রয়োজন রইল না। দোকানের বাইরে বোর্ড ও নেতাজির ছবি লাগিয়ে চলল তার জন্মদিনে বিনামূল্যে লোকজনকে চপ খাওয়ানো। এর পর থেকে আজ অবধি পরবর্তী তিন প্রজন্ম প্রতি বছর ২৩শে জানুয়ারি সকাল আটটা থেকে দুপুর দুটো আড়াইটে পর্যন্ত এই দোকানে আসা সকলকেই বিনা পয়সায় চপ খাওয়ায়। বড়দের দেওয়া হয় চারটে চপ, আর ছোটদের দুটো।

কত মানুষকে নেতাজির জন্মদিনে তেলেভাজা খাওয়ানো হয় এই দোকানে? দোকানের বর্তমান মালিক মোহন সাউ জানিয়েছেন, হিসেব নেই সেইভাবে, তবে কমবেশি প্রায় ১০ হাজার মানুষ তো অবশ্যই। তাঁদের বক্তব্য, এভাবেই নেতাজির মত দেশনায়কের প্রতি তাঁরা শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপন করেন।

Related posts

অজয়কে জামাই হিসাবে কতোটা পছন্দ ছিল তনুজার! জানালেন কাজল

News Desk

করোনা টিকা নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ শিলিগুড়িতে: একই দিনে দিয়ে দিল টিকার দুটি ডোজ

News Desk

এখানকার জনসংখ্যার অর্ধেকই যৌনতায় বিরক্ত, তারা মাসে একবার সেক্স করেন, কেন জানেন?

News Desk