নতুন বছরের শুরু থেকেই দেশজুড়ে আছড়ে পড়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। সারা দেশজুড়ে সংক্রমণ বাড়লেও করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সবচেয়ে বেশী প্রভাব দেখা যাচ্ছে দিল্লি ও মুম্বাইয়ে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ সমীরণ পান্ডা সর্ব ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-তে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে দৈনিক করোনা কেসের পরিপ্রেক্ষিতে দেশ করোনা মহামারীর তৃতীয় ঢেউয়ের শীর্ষে রয়েছে কিনা সেটা খুব তাড়াতাড়ি নিশ্চিত করা গেছে। মনে করা হচ্ছে সংক্রমনের চরম শিখরে পৌঁছে গেছে দিল্লি ও মুম্বাই।
প্রসঙ্গত জেনে রাখুন যে ডাঃ সমীরণ পান্ডা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) এর এপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান।
ডক্টর সমীরণ পান্ডা সেই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমাদের এখনো অন্তত দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে এটা বলার আগে যে দিল্লি এবং মুম্বাইতে করোনা সংক্রমণ তার চরমপর্যায়ে পার করে এসেছে এবং সবচেয়ে খারাপ সময় শেষ হয়েছে। আমরা কয়েকদিন না গেলে এই বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে বলতে পারবো না। আমরা কেবল করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে হ্রাস পাওয়া এবং পজিটিভিটি হারের ভিত্তিতে এটি বলতে পারি না।
১১ মার্চের পর করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তির আশা:
ডাঃ সমীরণ পান্ডা বলেছেন যে দুটি বড় মেট্রোপলিটন শহরে, কোভিড -১৯ এর ওমিক্রন এবং ডেল্টা আক্রান্তের অনুপাত যথাক্রমে ৮০ এবং ২০ শতাংশের কাছাকাছি। তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য বর্তমানে মহামারীর বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।
ডাঃ সমীরণ পান্ডা জানিয়েছেন, ভারতে ১১ মার্চের পর করোনা সংক্রমণ এমন জায়গায় পৌঁছাতে পারে যে এটি কেবল মাত্র কোন কোন জায়গার স্থানীয় সংক্রমণ বা আঞ্চলিক সংক্রমণ হয়ে থেকে যাবে। অবশ্য করোনা কে এমন পর্যায়ে পৌঁছনোর জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। স্থানীয় স্তরে সংক্রমণ থেকে যাওয়ার অর্থ হলো সংক্রমণটি একটি নির্দিষ্ট জনসংখ্যা বা এলাকায় তুলনামূলকভাবে কম প্রকোপ সহ উপস্থিত রয়েছে। এটি একটি মহামারী থেকে একটি ভিন্ন পরিস্থিতি। বলা যায় এটা প্যানডেমিক না এন্ডেমিক রূপে থেকে যাবে। ডাঃ সমীরণ পান্ডা এর মতে, এর পরে যদি করোনার কোন নতুন প্রজাতি আর দেখা না যায়, তাহলে 11 মার্চের পরে, করোনা শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবে একটি তুলনামূলক কমজরি সংক্রমণ হিসাবে থাকতে পারে।
ডাঃ সমীরণ পান্ডা বলেছেন যে ম্যাথমেটিক্যাল হিসাব তাই বলে। গণিত অনুসারে ওমিক্রন ভাইরাস সংকট ভারতে ১১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল। এবং এই সংক্রমণ এর প্রভাব থাকার সম্ভাবনা তিন মাস। তিনি বলেন, ‘১১ মার্চের পর কিছুটা স্বস্তি পাব।’ অর্থাৎ এখনো আমাদের বেশকিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে করোনা তৃতীয় ঢেউ পার করতে।