নিজে কখনও স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাননি। কিন্তু তাঁর মতো পরিণতি যাতে ভবিষ্যত প্রজন্মের না হয়, সেজন্য কমলালেবু বিক্রি করে সংগৃহীত অর্থ তিনি দান করে দেন স্কুল তৈরির জন্য। শিক্ষাক্ষেত্রে এই বিশেষ অবদানের জন্য ম্যাঙ্গালুরুর বাসিন্দা কমলালেবু বিক্রেতা হরেকালা হাজাব্বাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারের সম্মানিত করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
ম্যাঙ্গালুরুর ৬৬ বছর বয়সী হরেকালা নিউপাদপু গ্রামে একটি স্কুল নির্মাণ করে গ্রামীণ শিক্ষায় বিপ্লব আনার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন। হাজাব্বা ১৯৭৭ সাল থেকে ম্যাঙ্গালুরু বাস ডিপোতে কমলা বিক্রি করেন। তিনি নিজে অশিক্ষিত। কখনও স্কুলেই যাননি৷ ১৯৭৮ সালে এক বিদেশি কমলার দাম জানতে চাইলে গ্রামে শিক্ষায় বিপ্লব আনার ইচ্ছা তাঁর মনে আসে।
জানা যায়, হরেকালার গ্রাম নিউপাদাপুতে কোনও স্কুল ছিল না। নিজে কোনওদিনও স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাননি। কমলালেবু বিক্রি করেই হরেকালার সংসার চলে। বিদেশি পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলতে না পারায় শিক্ষার মর্মার্থ বুঝতে পারেন তিনি। এরপরই নিজের গ্রামে স্কুল তৈরি করার পরিকল্পনা করেন যাতে অভাবী ছেলেমেয়েরা সেখানে পড়াশোনা করতে পারেন। সেইমতো ২০০০ সালে এক একর জমিতে একটি প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এই স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই হরেকালার নিজের গ্রামের চেহারাই পাল্টাতে শুরু করে। এলাকার বাসিন্দাদের কাছে হরেকালা ‘অক্ষরা সান্তা’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। এই বছর দেশের‘পদ্মশ্রী’-তে সম্মানিত হন তিনি। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ৬৪ বছর বয়সি হরেকালার হাতে এই সম্মান তুলে দেন।
স্কুল প্রতিষ্ঠা করার পর এবারে হরেকালার লক্ষ্য তাঁর গ্রামে প্রি–ইউনিভার্সিটি কলেজ তৈরি করা। দিল্লি থেকে ফিরে আসার পর হরেকালাকে জেলা প্রশাসনের তরফেও সম্মানিত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।