তিব্বতের বুদ্ধরা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করেন। যখন এই ধর্মের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ গুরু পাঞ্চেন লামা ১৯৮৯ সালে রহস্যজনক কারণে মারা যান, তখন তার পুনর্জন্ম ছিল কিছু সময়ের ব্যাপার মাত্র। ১৯৯৫ সালের ১৪ই মে তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর প্রধান গুরু দালাই লামা ঘোষণা দেন যে, পাঞ্চেন লামার নতুন দেহধারীকে তিনি খুঁজে পেয়েছেন। সে হলো তিব্বতের নকচু শহরের একজন চিকিৎসক ও সেবিকা দম্পতির ছয় qবছরের ছেলে গিনডু চোকি নিমা।
সুতরাং গিনডু চোকি নিমা এবং তার পরিবারকে দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় চীন এবং কিছু অনুগত বুদ্ধ নেতাদের সহায়তায় আরেকটি ছেলেকে পুতুল পাঞ্চেন লামা হিসাবে নির্বাচিত করে। ১৯৯৫ সালের ১৭ই মে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি গিনডু চোকি নিমাকে।
সাউথ চায়না মনিং পোস্টকে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তিনি এখন চীনের উত্তরাঞ্চলের গ্যানসুতে বসবাস করেন। আরেকটি ধারণা হলো যে, তাকে বেইজিং এর আশেপাশে কোথাও আটকে রাখা হয়েছে।
পাঞ্চেন লামা কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ?
দালাই লামার মতো পাঞ্চেন লামাকেও বুদ্ধের একজন অবতার বলে মনে করা হয়। তাকে বলা হয় বুদ্ধের সীমাহীন আলোকবর্তিকা, যেখানে দালাই লামা হচ্ছেন বুদ্ধের দয়ার অবতার।ঐতিহ্যগতভাবে তারা একজন অপরজনের পরামর্শক হিসাবে কাজ করেন এবং অপরজনের পুনর্জন্মকারীকে খুঁজে বের করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। দালাই লামার চেয়ে যেহেতু পাঞ্চেন লামার বয়স ৫০ বছর কম, তাই ধারণা করা হয় তিনি একসময় ৮৩ বছর বয়সী দালাই লামার স্থলাভিষিক্ত হবেন।
অবসর ও পুনর্জন্ম নামের একটি বার্তায় ২০১১ সালে দালাই লামা লিখেছেন, ” তারা বলছে, তারা আমার মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছে এবং ১৫তম দালাই লামাকে তাদের পছন্দ অনুযায়ী বাছাই করে নেবে।”
দালাই লামার পুনর্জন্মকারীকে খুঁজে বের করতে গুরুত্বপূর্ণ পালন করবেন পাঞ্চেন লামা। তবে তিনি ধারণা করেন, যখন সেই সময় আসবে, তখন চীনা কর্তৃপক্ষ ‘হয়তো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ করার জন্য তাদের পছন্দের কোন ব্যক্তিকে পাঞ্চেন লামা হিসাবে বাছাই করবে’।’
এ বছর মার্চে রয়টার্সকে দালাই লামা বলেছেন, তার উত্তরসূরিকে ভারতে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে, যেখানে তিনি এবং অন্য অনেক তিব্বতি প্রায় ৬০ বছর ধরে বাস করছেন।
তিনি আরো বলেছেন, এ বছরের শেষের দিকে তিব্বতের বুদ্ধদের সঙ্গে ভারতে একটি বৈঠক হবে, যেখানে আলোচনা হবে যে, আদৌ আর দালাই লামার প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন আছে কিনা।