অনলাইনে গেমে হেরে বসেছিল ৪০ হাজার টাকা। টাকা খুইয়ে কী করবে তা বুঝেতে পেরে না উঠে শেষ পর্যন্ত ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া এক ছাত্র গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হল। এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশর ছতরপুর জেলায়। জানা গিয়েছে, আত্মঘাতী ওই বালক মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে ছেড়ে গিয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। ১২ বছরের সেই ছেলের আত্মহত্যায় তদন্তে নেমে পুলিশ সেই সুইসাড নোটটি উদ্ধার করেছে। অল্প বয়সী ছেলেটির এহেন পদক্ষেপে স্তম্ভিত গোটা দেশ। অনলাইন গেমে আসক্তির কারণে যে মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের কতখানি অবনতি হয় সেই বিষয়টি সামনে এল।
মধ্যপ্রদেশের ছতরপুর জেলার শান্তিনগরে ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি। বালকটির বাবা পেশায় একজন প্যাথলজিস্ট। তার মাও সরকারি একটি প্যাথলজি ল্যাবে কর্মরত। শুক্রবার ঘটনার দিন বাড়িতে ছিল ওই কিশোর ও তার বোন। পুলিশ সূত্রে খবর, তার মা সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না। হঠাৎ-ই তার মা খেয়াল করেন তার মোবাইলে মেসেজ এসেছে, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে দেড় হাজার টাকা। সাথে সাথেই তিনি ছেলেকে ফোন করে জানতে চান, সে কি এমন কিছু করেছে, কেন তার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হল। উত্তরে ওই কিশোর মা কে জানায়, ‘ফ্রি ফায়ার’ নামক একটি অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে সে ওই টাকা খরচ করে ফেলেছে। বিষয়টি শুনেই তার মা অত্যন্ত রেগে যায়। ছেলেকে কিছুটা বকাঝকাও করেন তাঁর মা। আর তার পরই নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় ওই কিশোর। কিছু সময় পেরোলে বিষয়টি নজরে আসে কিশোরটির বোনের। বহুক্ষুন কেটে গেলেও দরজা না খোলায় সে তার বাবা-মাকে ঘটনা জানায়। এরপর তারা এসে, দরজা ভাঙলে উদ্ধার হয় নাবালকের ঝুলন্ত মৃতদেহ। ঘটনায় স্তম্ভিত পুরো দেশ।
ঘটনার তদন্তে নেমে একটি সুইসাইড নোট খুঁজে পায় পুলিশ। ডিএসপি শশাঙ্ক জৈন জানান, ঐ কিশোরটি রেখে গিয়েছে একটি সুইসাইড নোট। সেই চিঠিতে মায়ের কাছে ক্ষমাপার্থি ওই কিশোর ৪০ হাজার টাকা খরচের জন্যে। এমনকি আত্মহত্যার কারণ হিসেবেও সে অবসাদের কথাই লিখেছে। সুইসাইড নোটে লেখা ফ্রী ফায়ার (Free Fire) গেমে মায়ের UPI Account ব্যাবহার করে ৪০ হাজার টাকা ‘অপচয়’ করে ফেলাতে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
ছতরপুর থানার এসপি সচিন শর্মা জানান, ‘এখনও অভিভাবকদের বয়ান রেকর্ড করা বাকি। তাঁদের বয়ান নেওয়ার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এসপি সচিন শর্মা আরও জানান, ‘সাধারণত এই সব অনলাইনের গেমের কেউ টাকা খরচ করতে হলে কেউ ১৮ বছরের কম বয়সী হলে বাবা-মায়ের অধীনে দিতে হয় টাকা জমা। সেই ক্ষেত্রে এই গেমে টাকা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো নীতি ভঙ্গ হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে।’ যেই ফোনে গেম খেলা হত, সেই মোবাইলটিকেও ফরেনসিক রিপোর্ট এর জন্য পাঠানো হয়েছে।