কয়েক দিন আগেই হেলিকপ্টার উড়িয়ে মঙ্গলের (Mars) মাটিতে কার্যত অসাধ্য সাধন করেছে নাসা (NASA)। এবার পারসিভিয়ারেন্স (Perseverance) আরও এক অবিশ্বাস্য কীর্তি গড়ল । ছয় চাকার এই রোভার (Rover) কার্বন-ডাই-অক্সাইড থেকে উৎপাদন করে ফেলেছে অক্সিজেন লাল গ্রহের মাটিতে । স্বাভাবিক ভাবেই বিজ্ঞানীরা উচ্ছ্বসিত । তাঁদের দাবি, এই সাফল্য ভবিষ্যতের নভোচারীদের জন্য যুগান্তকারী হিসেবেই প্রতিপন্ন হবে।
এমনিতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড থেকে অক্সিজেন উৎপাদন পৃথিবীতে ঘটানো গেলেও এই প্রথম অন্য কোনও গ্রহে তা ঘটানো সম্ভব হল। আর ব্যাটারির আকারের এক সোনালি বাক্স এই সাফল্যের আসল কারিগর গাড়ির । যার নাম মক্সি তথা ‘মার্স অক্সিজেন ইন-সিটু রিসোর্স ইউটিলাইজেশন এক্সপেরিমেন্ট’ । আর মোক্ষলাভ এই মক্সিতেই । মূলত বিদ্যুৎ ও রাসায়নিকের সাহায্য়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে বিশ্লিষ্ট করে রোভারের সামনে বসানো এই ছোট যন্ত্র ৫ গ্রাম অক্সিজেন উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রসঙ্গত, সাধারণ অবস্থায় মিনিট দশেক শ্বাসপ্রশ্বাস চালানো যায় ওই পরিমাণ অক্সিজেন দিয়ে । গত ২০ এপ্রিলের সাফল্যের পরে আরও নতুন পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে যাবে মক্সি। আপাতত ১০ গ্রাম অক্সিজেন করা তার লক্ষ ঘণ্টায় । প্রসঙ্গত, কেবল অক্সিজেন নয়, তার সঙ্গে কার্বন মনোক্সাইডও উৎপাদিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি লাল গ্রহের মাটি স্পর্শ করেছে পারসিভিয়ারেন্স। তারপর থেকেই রোভার চমকে দিয়েছে । এই প্রথম তারই সৌজন্যে মঙ্গলের শব্দ রেকর্ড করা সম্ভব হয়েছে । তবে গত সোমবার অন্যতম সেরা সাফল্য এসেছে । এই প্রথম হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেল অন্য কোনও গ্রহের আকাশে । মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার হেলিকপ্টার ইনজেনুইটির এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত হতে দেখা যায় নাসার বিজ্ঞানী ও কর্মীদের। মঙ্গল-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ ফুট উপরে উড়তে দেখা যায় নাসার এই কপ্টারকে। কেবল আকাশে ওড়াই নয়, এরপর ধীরে ধীরে সেটিকে মাটিতে নেমে আসতেও দেখা যায়। এরপরই মক্সির এই সাফল্য যে নাসার মুকুটে নয়া পালক হয়ে জুড়ে গেল তা বলাই বাহুল্য।