পুত্র সন্তানই কাম্য। তার জন্য যা কিছু করতে প্রস্তুত ছিলেন মহিলা। কিন্তু তা বলে নিজের মাথায় নিজেই হাতুড়ি দিয়ে পেরেক গাঁথা! এও কি কেউ করতে পারে? শুনে অবাক লাগলেও এমনটাই ঘটেছে ভারতের পড়শী দেশ পাকিস্তানের এক প্রদেশে। সূত্র অনুযায়ী জানা গেছে ওই মহিলা অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু পুত্র সন্তানই কাম্য তার। মেয়ে সন্তান চাই না কিছুতেই। উপায় খুঁজতে তাই এক ওঝার কাছে যেতেন মহিলা। সম্ভবত সেই ওঝাই তাঁকে বলেন এই উপায়ে জন্ম নেবে পুত্র সন্তান। কিছু আর না ভেবেই সেই উপায় অবলম্বন করতে সটান মাথায় হাতুড়ি ঠুকে পেরেক ঠুকে গাথেন ওই প্রেগন্যান্ট মহিলা!
নানা সূত্রে বারবার উঠে এসেছে, পাকিস্তানে বহু স্থানে এমন ওঝা, ফকিরের প্রভাব আছে। এদের অন্ধের মতো বিশ্বাসও করেন অনেকে অসাধ্য সাধনের জন্য। ইসলাম নীতি মেনে চলা সংগঠন অনেকসময় এইসব ওঝাদের স্বীকৃতি দেয় না। তবুও পাকিস্তানের নানা প্রদেশে এদের রমরমা চলছে। পাশপাশি এশিয়ার অনেক দেশের মত সেই দেশেও আছে কন্যা সন্তানের প্রতি অনাগ্রহতা। চলে কন্যাভ্রূণ হত্যার মত ঘটনা।
এই ঘটনা বিষয়ে জানা গিয়েছে, মরিয়া হয়ে মাথায় পেরেক পোঁতার পরই ওই মহিলা গুরুতর আহত হয়ে পড়েন। আহত অবস্থায় চেষ্টা করেন নিজের মাথা থেকে পেরেকটি বের করার। কিন্তু, এতে অসমর্থ হন তিনি। যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকেন। এরপর পেশোয়ারের একটি হাসপাতালে ওই মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্মরত চিকিৎসক হায়দার খান সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে জানিয়েছেন, ওই মহিলাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন সজ্ঞানে ছিলেন তিনি। কিন্তু, যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন ওই অন্তঃসত্বা। তাঁর কাণ্ড দেখে হতবাক চিকিৎসকরাও! প্রসঙ্গত, ওই মহিলা তিন সন্তানের মা এবং তার তিন সন্তানই কন্যা সন্তান। এবং পরীক্ষায় জানা গেছে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানও একটি মেয়ে!
মহিলাকে হাসপাতালে আনার পরই X-ray করা হয় তাঁর মাথার। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রায় দু’ইঞ্চি পর্যন্ত পেরেকটি গেঁথে রয়েছে মহিলার মাথার ভিতর। তবে সেটি তাঁর মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারেনি একটুর জন্য। যদিও মহিলা নিজেই পেরেক পুঁতেছিলেন নিজের মাথায়, নাকি এই ভয়ংকর কাণ্ড ঘটিয়েছিল অন্য কেউ, তা নিয়ে সন্দীহান চিকিৎসকরা। কারণ, এই কাজ তিনি নিজেই করেছেন বলে মহিলা তাঁদের প্রথমে জানিয়েছিলেন। পরে দাবি করেন, তাঁর মাথায় ওই ওঝাই পেরেক পুঁতেছিল। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পেশোয়ারের পুলিশ।