স্বামীর রয়েছে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। সেই বিষয়ে জানতে পেরে গেছিলেন স্ত্রী। যার কারণে স্বামী স্ত্রীর বিবাদ লেগেই থাকত। কিন্তু এরপরেই একদিন ঘটে যায় মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা। ওই মহিলার স্বামী মহিলার বাপের বাড়িতে ফোন করে খবর দেন যে তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এমন খবরে হতচকিত হয়ে যান মহিলার বাপের বাড়ির সদস্যরা। তাদের কিছু একটা সন্দেহ হয়। পুলিশে অভিযোগ জানান তারা। পুলিশ তদন্তে নামলেই সামনে আসে হারহিম করা তথ্য। কবর খুঁড়ে বার করা হয় মহিলার মৃতদেহ। উদ্ধারের পর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর খুজেঁ বার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয় গৃহবধূর দেহ। মৃতার নাম মোফিজা লস্কর। বয়স বছর আঠাশ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের অন্তর্গত ধোষা-চন্দনেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তিলপি-এর কুলবেড়িয়া গ্রামে।
জানা গেছে বছর নয়েক আগে ক্যানিংয়ের ধর্মতলা গ্রাম নিবাসী মোফিজার সাথে ফোনের মাধ্যেমে পরিচয় হয় জয়নগরের তিলপির কুলবেড়িয়ার সাদ্দাম লস্করের। আলাপের পরে দুই পরিবারের রীতি মেনেই তাঁদের বিয়ে হয়। বিবাহিত জীবনে তাদের ৮ বছরের এক ছেলে আর সাড়ে চার মাসের এক মেয়ে আছে। অভিযোগ, বিয়ের কিছুদিনের পর থেকেই ওই অঞ্চলের এক মহিলার সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত থাকেন সাদ্দাম। এই বিষয়ে টের পেয়ে যায় গৃহবধু মোফিজা। স্বাভাবিকভাবে তারপর থেকেই স্বামীর সঙ্গে সমস্যা শুরু হয় তার, চলে অশান্তি। বিবাদ দিনে দিনে বাড়তেই থাকে।
এরপর গত ২৪ জানুয়ারী সাদ্দামের ভাই ইসরাফিল লস্কর আচমকা ফোন করেন মোফিজার বাপের বাড়ির লোকজনকে। সে জানায় যে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মোফিজা। কিন্তু পরিবার গোটা বিষয়টি মানতে নারাজ। প্রথম থেকেই তাদের দাবি যে খুন করা হয়েছে মেয়েকে। পরে সঠিক বিচারের দাবিতে জয়নগর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানায় মৃতার ভাই সরিফুল সর্দার। সরিফুল সরদার আরও অভিযোগ করে বলেন, ” আমার দিদির স্বামী কয়েকদিন আগে ফোন করে বলে দিদি নাকি আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমারা জানি খুন করা হয়েছে ওকে। আরও একটি সম্পর্ক ছিল আমার জামাইবাবুর। তবে ওরা যেভাবে আমার দিদিকে খুন করে ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিল যেন দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হয় ওদের। আমরা প্রশাসনের কাছে সেই আবেদন জানিয়েছি।”
অপরদিকে অভিযুক্ত মোফিজার স্বামী অর্থাৎ জয়নগরের তিলপি গ্রামের সাদ্দাম সহ তার পরিবার পরিজন ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছে।ইতিমধ্যেই তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে জয়নগর থানার পুলিশ। শুক্রবার মহিলার মৃতদেহটি কবর খুঁড়ে তুলে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়।