আবারো সেই মানসিক সমস্যা দেখা দিলো মৃতদেহ ঘিরে পরিবারের সদস্যের । হুগলী জেলার চুঁচুড়ায় এক মহিলা তার স্বামীর মৃতদেহ টানা দুদিন রেখে দিয়েছিলেন, শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকজন সেই শব দেপ বাগানে ফেলে দিলেন। ওই মৃত ব্যক্তির নাম দিলীপ রক্ষিত, মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল ৬৫। চুঁচুড়ার খড়ুয়া বাজারের কাছে লোহাপট্টি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, লোহাপট্টিতেই থাকতেন মৃত দিলীপ রক্ষিত তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে। সেচ দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন দিলীপবাবু। স্থানীয়দের বক্তব্য গত কয়েক বছর ধরে তাঁরা বাড়ির বাইরে বেরতে খুব কমই দেখেছেন দিলীপবাবুকে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের স্ত্রী ও পুত্রের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না থাকায় মাঝেমধ্যেই তিনি নিখোঁজ হয়ে যেতেন।
সেইরকমই এবারও হয়েছিল। দিলীপবাবু বাড়ি ফিরে আসেন দিন দশেক আগে। দিলীপবাবুর বাড়ির বাগানে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে লেপ জড়ানো অবস্থায় কোনও কিছু পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। কাছে যেতেই প্রচণ্ড দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে দেখা যায়। এর পরই লেপের ভিতর জড়ানো অবস্থায় কোনও মৃতদেহ পড়ে রয়েছে বলে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়।
স্থানীয়রা চুঁচুড়া থানায় সঙ্গে সঙ্গে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। লেপ সরাতেই দেখা যায় দিলীপবাবুর মৃতদেহ তার মধ্যে রয়েছে। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে মৃতদেহ উদ্ধার করে পাঠায়।
অন্যদিকে মৃতের স্ত্রী পদ্মা রক্ষিত পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী রবিবার মারা গিয়েছেন। তারপর থেকেই দু’দিন ধরে বাড়িতেই ছিল মৃতদেহ। কিন্তু মৃতদেহে পচন শুরু হওয়ায় দুর্গন্ধ বের হতে থাকায় তাঁরা বাড়ির বাগানে মৃতদেহ ফেলে দিয়েছেন টিকতে না পেরে।
পরিবারের এহেন বক্তব্য শুনে স্বাভাবিক ভাবেই রীতিমতো স্থানীয়দের চক্ষু চড়কগাছ। পাশাপাশি কেন কোনও চিকিৎসককে ডাকা হয়নি দিলীপবাবু মারা যাওয়ার পর সেই প্রশ্নের জবাবে মুখে কুলুপ এঁটেছেন স্ত্রী। স্থানীয়দের দাবি, প্রকৃত কারণ খুঁজে বার করুক পুলিশ এই ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যুর। তবে তাঁরা মনে করেন যেভাবে একজন মানুষকে বাগানে ফেলে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুর পর তা গর্হিত অপরাধ নিঃসন্দেহে। চুঁচুড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর স্ত্রী ও ছেলে সুসম্পর্ক ছিল না মৃতের সঙ্গে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর কেস শুরু করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, মানসিক বিকারগ্রস্ত হতে পারেন মৃতের স্ত্রী।