স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের বিশ্বাসকে কলঙ্কিত করার মতন এক ঘটনা সামনে এসেছে বিহারের কিষাণগঞ্জ থেকে। যেখানে এক মহিলা, দেওরের সাথে হাত মিলিয়ে তার স্বামীকে সুপারি কিলার দিয়ে খুন করেছে। তদন্তে নেমে ফরেনসিক রিপোর্ট দ্বারা এমজিএম মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত পাপ্পু হত্যাকাণ্ড ফাঁস করেছে পুলিশ। বৌদি ও দেওরের মিলিত ষড়যন্ত্রের কথা প্রকাশ করে পুলিশ নিহতের স্ত্রী প্রীতি গুপ্তা ও প্রীতির দেওর অর্থাৎ পাপ্পুর ভাই রাজু গুপ্তসহ শুটার সুরজকে গ্রেফতার করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্য শুটারদের খোঁজে পুলিশ জায়গায় জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পাপ্পুকে হত্যার জন্য নওয়াগাছিয়ার গোপালপুর থেকে শুটার ডেকে আনিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। আসামিদের মোবাইল সিডিআর থেকে এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানা গেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, পিস্তল, ছুরি ও অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখা যাক যে, ২৬ শে জুলাই রাতে ডিউটি থেকে ফেরার সময় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির গুলিতে গুরুতর আহত হন পাপ্পু গুপ্তা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী প্রীতি বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টির গুরুত্বের পরিপ্রেক্ষিতে এসডিপিও কিষাণগঞ্জের এসপি কিশানগঞ্জের নেতৃত্বে একটি এসআইটি গঠন করা হয়। প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসআইটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছে পুলিশ। নবাগাছিয়া জেলার বিভিন্ন থানা পুলিশের সহায়তায় তিন অপরাধীকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, নিহতের স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার দেওরের। এর মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল পাপ্পু। যার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
মৃতের স্ত্রী প্রীতি কুমারী এমজিএম হাসপাতালের বিএসসি নার্সিং তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, বৌদি আর দেওর পালিয়ে বিয়ে করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সফল হতে পারেননি। এরপর দুজনেই পাপ্পুকে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। এ জন্য সুপারি কিলারের সহায়তা নেওয়া হয়। এক লাখ টাকায় চুক্তি হয় এবং ২০ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়। কাজ শেষ হলে বাকি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অপরাধীরা পাপ্পু গুপ্তাকে ট্র্যাক করে এবং তাকে অতর্কিতভাবে আঘাত করে এবং গুরুতর আহত করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পুলিশ তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে এবং অন্যদের খোঁজ করছে।