পণপ্রথা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই মানুষ অনেক প্রতিবাদ করে আসছে। এমনকি পণ প্রথা রোধে এবং পণের কারণে হওয়া মৃত্যু বা নির্যাতন রুখতেও সরকার সচেষ্ট। কিন্তু সরকার লক্ষ লক্ষ কঠোর আইন প্রণয়ন করলেও যৌতুক লোভীরা যৌতুকের ব্যাপারে যে কোন মাত্রা অবধি যে যেতে পারে সেটা বারবার প্রমাণিত।
সম্প্রতি এমনই একটি মর্মান্তিক ঘটনার খবর সামনে এসেছে। ঘটনাটি পাটনার সাথে সম্পর্কিত, যেখানে পাটনা শহরের মেহেন্দিগঞ্জ থানা এলাকার লোয়ার গলি নিকটবর্তী রানীপুর আখড়ায় যৌতুকের জন্য এক নব বিবাহিত বধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। নিহতের স্বজনরা ঘটনার বিষয়ে পুলিশের কাছে ডায়েরি করার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নালন্দা মেডিকেল কলেজে (এনএমসিএইচ) পাঠায়।
নিহত মমতা কুমারী খাজেকলা থানা এলাকার হাজারী মহল্লার বাসিন্দা গোপাল দাসের মেয়ে। এই ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পুলিশ মৃতের শাশুড়ি গুড়িয়া দেবীকে গ্রেপ্তার করেছে, যখন অভিযুক্ত স্বামী রোহিত যাদব এবং তার বাবা এখনো পলাতক বলে জানা গেছে, যাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। জানা গিয়েছে যে, মমতা কুমারীর ৮ মাস আগে মেহেন্দিগঞ্জের বাসিন্দা রোহিত যাদবের সাথে আন্তঃবর্ণ প্রেমের বিয়ে হয়েছিল। এই বিয়ে তরুণী নিজের পছন্দে প্রেম করেই করেছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই অবস্থা দ্রুত বদলাতে থাকে। যৌতুকের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে হেনস্থা করে।
জানা গেছে গৃহবধূর ওপর অত্যাচার দিন প্রতি দিন বাড়তেই থাকে। শেষ পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে মমতা কুমারীর ভাই বাবলু দাস জানান, তার জামাইবাবু রোহিত যাদব আগেও বিয়ে করেছিলেন, প্রতারণা করে দ্বিতীয়বার তার বোনকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি জানান, মমতাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার বোনের মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজনেরা জানতে পেরে বাধা দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়। এরপরই ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ।