স্বামী স্ত্রীর মধ্যেকার কলহ বেশ সাধারন বিষয়। হয় আবার মিটেও যায়। কিন্তু দাম্পত্য বিবাদের ফল যে এরকম হতে পারে কল্পনাও করতে পারেনি কেউ। স্ত্রীর রাগে কার্যত স্বামীর দেহে দীর্ঘ সময় ধরে চলল বিষক্রিয়া। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে কেরালার কোট্টায়াম জেলার পাল শহরে। সেখানকার এক মহিলাকে এই অপরাধে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ যে, ওই মহিলা তাঁর স্বামীর খাদ্যে মাদক মিশিয়েছেন। আর এই ঘটনা চলেছে বেশ লম্বা সময় ধরে প্রায় ছয় বছর। মহিলার স্বামী ৩৮ বছর বয়সি সতীশ পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে প্রমাণের ভিত্তিতেই পুলিশ ওই ব্যক্তির স্ত্রী আশা সুরেশ (৩৬)-কে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই দম্পতি ২০০৬ সালে বিয়ে করেন। তারা কেরালার কোট্টায়াম জেলার পাল শহরে বসবাস করতেন। প্রথমদিকে, ওই ব্যাক্তি সতীশ এর ব্যবসা ভালো মতন চলত না। এর পরে তিনি নামেন আইসক্রিমের ব্যবসায়। তারপর থেকেই তার উন্নতি হয়। কিছু সম্পত্তিও করে সে। ২০১২ সালে দম্পতি পালাক্কাদে একটি বাড়ি কিনেছিলেন। ওই ব্যক্তি পুলিশের কাছে নিজের অভিযোগে জানিয়েছে যে তার সাথে তার স্ত্রীর পর থেকেই কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়। ঝগড়া ঝাটি হতে থাকে। এরপর যত সময় এগোয় ততই সতীশ খেয়াল করেন যে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন প্রায়ই। শরীরে অবসাদ অনুভব হতো তার কোনো কাজ না করেই।
এরপর ওই ব্যাক্তি ডাক্তার দেখান। চিকিৎসক তাঁকে জানান, হয়ত তার সুগার ফল হচ্ছে। সেই মত ওষুধও দেন। কিন্তু তাও ওই ব্যক্তি খেয়াল করেন যে ওষুধ খেয়েও তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছেনা। দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সতীশ বাড়ির খাবার খাওয়া এড়িয়ে যেতে থাকেন। তারপরই খেয়াল করেন যে তারা অনেকটা ভালো অনুভব হচ্ছে। তার সন্দেহ যায় তার স্ত্রীর দিকে। তার সন্দেহ হয় যে স্ত্রী আশা তার খাবারে কিছু মেশাচ্ছে কিনা?
সেই বন্ধু সতীশের স্ত্রী আশার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসাও করেন কিন্তু ওই মহিলা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরপরে বাড়ির ভেতরে লাগানো সিসিটিভি দেখেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন সতীশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে সতীশের খাবার ও জলে কিছু মেশাতেন স্ত্রী আশা। জিজ্ঞাসাবাদের সময় জেরার মুখে স্ত্রী আশা স্বীকার করেছেন যে তিনি স্বামীর খাবারে মাদক মেশাতেন। জানা গেছে স্বামী সতীশের সম্পত্তি নিয়ে এই দম্পতির বিবাদ। তার স্বামী তাঁকে বলেছিল সম্পত্তির ভাগ দেবেন না। সে তার সমস্ত সম্পত্তি তাঁর পরিবার এবং ভাইদের দিয়ে দেবেন। এই কথা শুনেই স্বামীর খাবারে নাকি মাদক মেশাতেন মহিলা। এ বিষয়ে এখনো পুলিশের তদন্ত চলছে।