Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

কেন কলকাতার ঐতিহাসিক এই লাল বাড়িটার নাম ‘রাইটার্স বিল্ডিং’ হল, জানেন?

মহাকরণ বা রাইটার্স বিল্ডিংস (Writers’ Building) পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক সময়ের মুখ্য সচিবালয় ভবন। রাজ্যের রাজধানী কলকাতার বিবাদীবাগ (BBD Bagh) অঞ্চলে লালদিঘির উত্তরে এই ভবনটি অবস্থিত। কিন্তু জানেন কি কেন কলকাতার মহাকরণ ভবন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক সময়ের মুখ্য সচিবালয় এই লাল বাড়িটার নাম Writers’ Building হল? এর পিছনে একটা মজার কাহিনি রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক…

আজ থেকে আড়াইশো বছর আগে, ১৭৭০ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির (East India Company) ইউরোপীয় কেরানিদের বসবাসের জন্য রাইটার্স বিল্ডিংসের (Writers’ Building) নকশা তৈরি করেছিলেন টমাস লিয়ন্স (Thomas Lyons)।

ইংল্যান্ডে ছিলেন ছুতোর। উপনিবেশ কলকাতায় এসে টমাস লিয়ন হয়ে গেলেন স্থপতি। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাঁকেই দিল এক বিশাল বাড়ি তৈরির কাজ। সে বাড়িতে বসে কাজ করবেন করণিকরা। সাম্রাজ্য যত বাড়ছিল, ততই দরকার হয়ে পড়ছিল কাজ করার লোকের। প্রথমে ব্রিটিশ-সহ ইউরোপীয়রাই ছিলেন সেই শ্রেণিতে। পরে তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিল শিক্ষিত বাঙালি সম্প্রদায়।

কালের স্রোতে গুরুত্বভার হারিয়ে ‘করণিক’ হয়ে গেল ‘কেরানি’। লিয়ন সাহেবের পরিকল্পনায় তৈরি সেই বাড়িতে বসে তাঁরা কাজ করতেন। তাই লাল ইটের সেই ভবনের নাম হল ‘মহাকরণ’।

করণিকদের কাজ ছিল মূলত লেখালেখির। কলম পেষার কাজ থেকেই কোম্পানির নিচুতলার এই কর্মীদের পরিচয় ছিল ‘রাইটার’। তাঁরা যে বাড়িতে বসে কাজ করেন, সেটাই ‘রাইটার্স বিল্ডিং’। এই ভবন নির্মাণের জন্য যে জমি নির্ধারিত হয়েছিল, সেখানে আগে ছিল সেন্ট অ্যান চার্চ। ষোড়শ শতকের প্রথমে তৈরি এই গির্জা ছিল কলকাতায় ব্রিটিশদের তৈরি প্রথম উপাসনাস্থল। কিন্তু দু’দশকের বেশি স্থায়ী হয়নি তাঁর অস্তিত্ব। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে দ্রুত ভেঙে পড়তে থাকে গির্জাটি। শেষে কার্যত পরিত্যক্ত গির্জা এবং তার চারপাশের জমিই নির্ধারিত হল রাইটার্স বিল্ডিং তৈরির জন্য। পুরনো ফোর্ট উইলিয়মের কাছে ১৭৭৭ থেকে ১৭৮০, এই ৩ বছর ধরে তৈরি হল করণিকদের ভবন।

বরাদ্দ করা জমির ৩৭,৮৫০ বর্গফুট জুড়ে তৈরি হয়েছিল ভবনের মূল অংশ। কলকাতায় এটাই নাকি প্রথম তিন তলা বাড়ি। রাইটার্স বিল্ডিংয়ে প্রথমে ১৯টি থাকার ভবন ছিল। তবে এর চেহারা দেখে হতাশ হয়েছিল সেকালের ব্রিটিশ সমাজ। তাঁদের কাছে মনে হয়েছিল ভবনটিকে দেখতে কোনও মলিন হাসপাতালের মতো। তাঁদের মনে হয়েছিল, কাজের প্রয়োজনে তৈরি এই ভবন দাঁড়িয়ে আছে শিল্পসুষমা থেকে দূরে। তবে উপনিবেশ শাসনের ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই এই ভবন ব্রিটিশদের কাছে ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিদিন শ’খানেক দলিল আর সরকারি নথি-পত্রের প্রতিলিপিও হাতে লিখেই তৈরি করতেন ব্রিটিশ কোম্পানির (East India Company) এই সব ইউরোপীয় কেরানিরা। সারা দিন ধরে দিস্তা দিস্তা নথি-পত্র লেখাই ছিল এঁদের কাজ। এই কেরানিদের সে সময় বলা হত ‘রাইটার’। এই ‘রাইটার’ থেকেই এই ভবনের নাম হয়ে যায় ‘রাইটার্স বিল্ডিং’ (Writers’ Building)।

Related posts

গণেশ চতুর্থী: এক সময় মাত্র একদিনই পালন হতো, এখন কেন ১০ দিন ধরে উদযাপন হয় জানেন

News Desk

পাত্র ৩৬ ইঞ্চির, আর পাত্রী ৩১! প্রথমে বিয়ে ভাঙলেও আবারও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলো যুগল

News Desk

দু’ দুবার বার ডেথ সার্টিফিকেট বার করা হলো ৭৫ বছর বয়সী জীবিত বৃদ্ধের! নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর কারণ

News Desk