Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

বাংলার ঘরে ঘরে অগ্রহায়ণ মাসে হয় ইতু পুজো! কেন করা হয় এই ব্রত? জানুন ইতুর কাহিনী

বর্তমান সময়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে বিশ্ব আর সাথে আমরাও। তাই এই প্রযুক্তিতে প্রাপ্তি যতই হোক হারানোর তালিকাও অনেক। বাংলার ব্রতকথা লোকাচারও হারিয়ে গেছে প্রযুক্তির কারণে। কিন্তু বাংলার এই ব্রতকথা এখনও বাংলার অনেক গ্রামে প্রচলিত আছে। মা ঠাকুমারা তাদের এই আধাত্মিকতা বাঁচিয়ে রেখেছেন, পাপ পুণ্যের বিশ্বাসের জেরেই আজও সন্ধ্যে হলেই তুলসী তলায় প্রদীপ জ্বালিয়ে তারা ব্রতকথা পালন করেন। সেরকমই এক ব্রত পালন হচ্চর এই ইতু পুজো ।

এই ইতুর অন্য এক নামও আছে তা হল মিত্র। এই ইতু কথাটি মিত্র থেকেই এসেছে কারণ মিত্র থেকেই মিতু এসেছে আর এই মিতু থেকেই ইতু কথাটি এসেছে। আবার অনেকে বলেন ইতু শব্দের সৃষ্টি আদিত্য শব্দ অপভ্রংশ হয়ে। সূর্য মিত্র নামেই অগ্রহায়ণ মাসে পুজিত হন। মহিলারা ইতুর ঘটে জল দেন অগ্রহায়ণ মাসে প্রতি রবিবার সকালে স্নান করে। এই দিন ঘটে জল দিতে হয় উপোস করে। জল দেওয়ার পরই খাবার খেতে পারবেন মহিলারা। এদিন সকালে সাধারণত মহিলারা নিরামিষ খাবার খেয়ে থাকেন। মহিলারা অগ্রহায়ণ মাসে চারটে রবিরার ইতুর ব্রত পালন করেন। এরপর ব্রত উদযাপন করা হয় শেষ রবিবার।

কথিত আছে, এক গরীব ব্রাক্ষ্মণ কোনো এক গ্রামে ছিলেন। একদিন ব্রাক্ষ্মণীকে চাল দিয়ে তিনি পিঠে বানাতে বলেন ভিক্ষা করে এসে। ব্রাক্ষ্মণী তাদের দুই মেয়ে উমনো ও ঝুমনোকে সেই পিঠে থেকে দুটো পিঠে দেন। ব্রাক্ষ্মণ তাতেই রেগে ‌যান। পিসির বাড়ি মেয়ে দুটোকে নিয়ে ‌যাওয়ার কৌশলে ঐ ব্রাক্ষ্মণ বাড়ি চলে আসেন পথে বনের মধ্যে মেয়ে দুটোকে ফেলে রেখে। সারারাত তাদের বাবাকে খুঁজতে থাকে অসহায় মেয়ে দুটো আর ঠিক তখনই দেখে কতকগুলি মেয়ে কিসের ব্রত পালন করছে পুকুরঘাটে। তারা সমস্ত দুঃখের কথা খুলে বলে তাদের। তাঁরা বলেন তোমাদের সব দুঃখ দুর হয়ে ‌যাবে তোমরা এই ইতুপুজো কর। সূর্যদেবকে প্রসন্ন করার জন্য ইতুপুজো শুরু করেন সারারাত উপবাস থাকা দুইবোন। সূর্যদেব তাদের সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ করেন সন্তুষ্ট হয়ে। সেটা কার্ত্তিক মাসের রবিবার ছিল। তারপর থেকেই ইতুপুজো করে গ্রাম বাংলা ঘরে ঘরে কার্ত্তিক মাসের প্রতি রবিবার। ব্রতকথা শোনাই রীতি পূজোর পর।

ইতুর ঘট কার্তিক সংক্রান্তির দিন পাতা হয়। মাটি দিয়ে ঘট বসনো হয় মাটির সরার মধ্যে। এই ইতুর ঘট তুলসী (Tulsi) তলায় রাখা হয়। অনেকে আবার ঠাকুর ঘরে ইতুর ঘট রাখেন। তারপর মহিলারা এক মাস ধরে ইতুর ঘটে জল দেন। পাঁচ কলাই সরাতে দেওয়া হয়। অনেকে মাটিতে পঞ্চশস্য ছড়িয়ে দেন। এর থেকে ছোট ছোট গাছ বের হতে থাকে। ঘটে জল দেওয়া হয়। এরপর ইতুর ব্রত পালন করা হয় অগ্রহায়ণ মাস ব্যাপী প্রতি রবিবার। ইতুর ব্রত পালন করে গঙ্গা বা পুকুরে ইতু ভাসিয়ে দেওয়া হয় অগ্রহায়ণ সংক্রান্তির দিন। মূলত মেয়েরা আমাদের রাজ্যে ইতু পুজো করে থাকেন। বিবাহিত ও অবিবাহিত মেয়েরা করতে পারেন এই পুজো। ইতুপুজো বিধবা মহিলারাও করতে পারেন। এই ব্রত সংসারের শান্তি বজায় রাখতে রাখা হয়। ইতুর পুজো প্রতি রবিবার পালিত হয়।

Related posts

কাটাছেঁড়ায় নিত্যসঙ্গী ব্যান্ড-এইড। এর উদ্ভাবনের সাথে জড়িয়ে আছে এক মজার কাহিনী!

News Desk

যৌন মিলনের পর একজন পুরুষের মাথায় তাঁর সঙ্গী সম্পর্কে কী চলে? জানলে অবাক হবেন

News Desk

এবারে খোলা বাজারে পাওয়া যাবে কোভিশিল্ড আর কোভ্যাক্সিন! কত দাম হতে পারে, জেনে নিন

News Desk