খোলা জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছেন। বা কোনো কাজ করছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই আড্ডায় এসে ঘিরে ধরেছে মশারা। কিন্তু অন্যদের থেকে যেন আপনাকেই হুল ফোটানোর জন্য বেশী পছন্দ মশার দলের। সবার মধ্যে যেন আপনিই মশার কামড়ে (Mosquito Bites) বেশী অতিষ্ট। তখন একটিই প্রশ্ন মনে আসা স্বাভাবিক, আপনাকেই কেন বেশী হুল ফোটাচ্ছে মশার দল! বাকি কাউকে তো এতো কামড়াচ্ছে না! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশা যে আপনাকে বেশী কামড়াচ্ছে এর পেছনে রয়েছে কারণ, নইলে কি আর মশারা বেছে বেছে কাউকে কামড়ায়।
সাধারণত, মশা সব মানুষকেই কামরায়। তবে কিছু কিছু মানুষকে মশা তুলনামূলক বেশি কামড়ায়। কিন্তু কেন এমনটা হয়? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
কার্বন ডাই অক্সাইড:
কোথায় কার্বন ডাই অক্সাইড বেশি নির্গমন হচ্ছে তা মশারা বুঝতে করতে পারে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, নানা প্রজাতির মশারা কার্বন ডাই অক্সাইডের ঘনত্বের প্রতি আলাদা আলাদা রকম প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। কোনো মানুষ শ্বাস তাগের সময় বেশি মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন করলে মশারা দূর থেকেই তা বুঝে যায়। আর সুযোগ বুঝে শিকার কে কামড়াতে থাকে।
শরীরের গন্ধ:
প্রত্যেক ব্যাক্তির ত্বকে ও ঘামে ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং অ্যামোনিয়ার মতো বিশেষ কিছু উপাদান থাকে। এই উপাদান গুলো মিলে মিশে আমাদের শরীরে একটি নির্দিষ্ট ধরনের গন্ধ তৈরি করে। সেই গন্ধ মশাদের আকৃষ্ট করে। এমনকি শরীরের এই আলাদা গন্ধ তৈরি হওয়ার পিছনে দায়ী থাকতে পারে জিন এবং ব্যাকটেরিয়া।
নিয়মিত মদ্যপান:
যারা নিয়মিত অ্যালকোহল পান করেন মশা তাদের অন্যদের থেকে বেশি কামড়ায়। ২০০২ সালে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত মদ্যপায়ীদের প্রতি মশারা বেশি আকর্ষিত হয় ও বেশী কামড়ায়।
কালো রঙের পরিধান
মশারা কালো রঙের দিকে অন্যান্য রঙের থেকে বেশি আকর্ষিত। এই কারণেই কালো রঙের জামাকাপড় পরিধান করলে বেশি মশা ঘিরে ধরে। কিন্তু কেন কালো রঙের প্রতি মশা দের এমন আকর্ষণ সেটা স্পষ্টভাবে এখনো জানা যায়নি।
রক্তের গ্রুপ
কিছু বিশেষ গ্রুপের রক্তের অধিকারী মানুষকে মশা একটু বেশিই কামড়ায়। দেখা গেছে, ‘ও পজিটিভি’ (O+) এবং ‘ ও নেগেটিভ’(O-) এই দুই রক্তের গ্রুপের মানুষকেই মশা বেশি করে কামড়ায়। গবেষণায় এও দেখা গেছে যে, মশা ‘ও’ রক্তের গ্রুপের মানুষকে ‘এ’ গ্রুপের রক্তের মানুষের চেয়ে দ্বিগুণ কামড়ায়।
জিনেটিক্স
জিনগত গঠনও মশার বেশী কামড়ানো আর কম কামড়ানোর উপর প্রভাব ফেলে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, জিনগত কারণে ৮৫ শতাংশ মানুষের শরীর থেকে এক বিশেষ ধরনের রাসায়নিক নির্গত হয় ত্বক দিয়ে, বাকি ১৫ শতাংশ লোকজন তা করে না।