Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
FEATURED ট্রেন্ডিং

আফগানিস্তানে আবারও প্রতিষ্ঠিত তালিবান শাসন! আসলে এই তালিবান কারা?

মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর থেকেই আফগানিস্তানে ক্রমাগত শক্তি বাড়িয়ে একের পর এক প্রদেশ দখল করে আবারও সেই দেশে তালিবান শাসন কায়েম করলেন তালিবান গোষ্ঠী। কিন্তু যাদের ত্রাসে গোটা আফগানিস্তান সহ দুনিয়া চিন্তিত সেই তালেবান আসলে কারা? কীভাবে জন্ম হয় এই তালিবান গোষ্ঠীর। ঘটে আফগানিস্তানে? জেনে নিন

পশতু ভাষায় তালেবান শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘ছাত্র’। মুলত ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় মাদ্রাসা ছাত্রদের নিয়ে এই সংগঠনের জন্ম হয়। তালিবান আন্দোলনকারীদের মূল ভাষা হল পশতুন। পাকিস্তানের এই স্থানের মাদ্রাসাগুলো মুলত চালনা করা হত কট্টর ইসলামিক সুন্নি মতাদর্শে। গোঁড়া মৌলবাদী মতাদর্শের ইসলামই প্রচার করা হতো তালিবানি আন্দোলনের মাধ্যমে। সেইরকম ভাবেই ১৯৯৪ সালে মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে তালেবানের আত্মপ্রকাশ ঘটে কট্টর শরিয়া ফতোয়া নিয়ে।

পাকিস্তান আফগানিস্তান দুই দেশের সীমান্তের দু’দিকেই আছে বিস্তীর্ণ পশতুন ভাষাভাষীদের অধ্যূষিত এলকা। এই সমস্ত এলাকায় দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তালিবান প্রভাবশালী তালেবান নেতৃত্ব এই অঞ্চলের মানুষকে আশ্বাস দেয়, ক্ষমতায় এলে তারা প্রদেশে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবে এবং কোরআন মেনে কঠোর ইসলামিক শরিয়া শাসন জারি করবে।

১৯৮০-র দশকে সোভিয়েতরা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর মুজাহিদীনদের প্রধান বুরহানউদ্দীন রাব্বানির শাসনে। কিন্তু তালিবান উত্থানের পর পরই দক্ষিণ-পশ্চিম আফগানিস্তানে তালিবান খুব দ্রুত তাদের প্রভাব বিস্তার করে আর এক বছরের মধ্যেই ১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বরে তারা ইরান বর্ডারের কাছের আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশ দখল করে নেয়। আর তার এক বছরের মধ্যেই তারা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন কায়েম করে।

Who are Taliban and how they formed

তালেবান যখন প্রথম প্রথম নিজেদের প্রভাব বিস্তার করেছিল তখন আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষ তাদের সমর্থন জানিয়েছিল। তারা শরিয়া আইনের সমর্থন করলেও দুর্নীতি দমনে কার্যকরিতা দেখিয়েছিল, আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছিল। তারা নিরাপদে ব্যাবসা বাণিজ্যের ব্যাবস্থাও করে দিয়েছিল।

কিন্তু পাশপাশি কঠোর ইসলামিক আইন মেনে তালিবানরা টেলিভিশন, গান বাজনা এবং সিনেমা নিষিদ্ধ করে। দশ বছরের উর্ধ্বে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার দরকার নেই বলে ফতোয়া জারি করে। পুরুষ ছাড়া কোনো মহিলার বাজারে যাওয়া এমনকি ডাক্তারের কাছে যাওয়াও তারা নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। এমনকি যদি বাজারে ৫ জন মহিলা একসাথে আসত, তাহলে তাদের লাঠি দিয়ে মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হতো। সামান্য সামান্য জিনিসে ছিল নিষেধাজ্ঞা। তা না মানলেই মিলত কঠোর শাস্তি। পুরুষদের দাড়ি কাটা ছিল নিষিদ্ধ। এমনকি ইসলামিক ছাড়া অন্য কোনো বই পড়লেও জুটত শাস্তি।

Taliban asks for list of girls above 15 and widows under 45

তালেবানের বিরুদ্ধে প্রচুর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংসের অভিযোগ থাকলেও এর মধ্যে সবচেয়ে নিন্দিত ছিল ২০০১ সালে আফগানিস্তানের মধ্যাঞ্চলে বিখ্যাত বামিয়ান বুদ্ধের মূর্তি ধ্বংস করে দেওয়া। এর বিরুদ্ধে তখন সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। কুখ্যাত জঙ্গি ওসামা বিন লাদেনের জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদাকেও আশ্রয় দেয় তালিবান গোষ্ঠী। এর পর ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে টুইন টাওয়ারের আল কায়েদার হামলার পর সারা বিশ্বের খবরের কেন্দ্রে চলে আসে আফগানিস্তানের তালিবান। ওসামা বিন লাদেন এবং তার আল কায়েদাকে নিশ্চিহ্ন করতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট আফগানিস্তান আক্রমণ করে ২০০১ সালের ৭ই অক্টোবর। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই তালেবান শাসনের পতন ঘটে। তারপর থেকে আফগানিস্তানে ছিল আমেরিকান সেনা। সেই সেনা সরতে না সরতেই ফের একবার আফগানিস্তানের দখল নিল তালিবান। এবারে আবারও তারা ২০ বছর আগের আতঙ্কের শাসন কায়েম করে কিনা সেটাই দেখার।

Related posts

ভূত চতুর্দশী পালনে কেন গুরুত্বপূর্ন ১৪ শাক খাওয়া ও ১৪ প্রদীপ জ্বালানো! জানুন কাহিনী

News Desk

মর্মান্তিক! স্ত্রী ও ভায়রা ভাইকে ফাঁসাতে নিজের ছেলের মুখে বালিশ চেপে মেরে ফেললেন বাবা!

News Desk

দুই ছেলে, চার মেয়ে.. আশ্রয় মেলেনি কারো ঘরে! প্রস্রাবের ব্যাগ হাতে রাস্তার ধারে ৮২ -এর বৃদ্ধ

News Desk