অনেকেই জানেননা রুদ্রাক্ষ আসলে কি? কিন্তু আসলে রুদ্রাক্ষ একটি গাছের ফল। অনেকেই রুদ্রাক্ষের মালা গলায় পরে থাকেন বিশেষ করে যারা একটু ধার্মিক হন। বিশেষত সাধু সন্ন্যাসিরা রুদ্রাক্ষের মালা পরে থাকেন বেশিরভাগ সময়। রুদ্রাক্ষের অর্থ হল দেবাদিদেব মহাদেব শিবের চোখ। রুদ্রাক্ষের জন্মদিন সম্পর্কে শিব পুরানে বলা হয়েছে। এক ক্ষত্রিয় রাক্ষস ছিলেন হিমালয়ে তাকে হত্যা করতে অনেক বছর যাবৎ শিবকে (Lord Shiva) সংগ্রাম করতে হয়। কোনও কারণে শিবের চোখে আঘাত লাগে সেই যুদ্ধে ব্যস্ত থাকার সময়। ফলস্বরূপ, অশ্রু জল তাঁর চোখ থেকে পতিত হতে থাকে। পদ্মযোনি ব্রহ্মা (Brahma) এই ঘটনার পর সেই অশ্রুজলকে বৃক্ষে পরিণত হওয়ার আদেশ দেন। এই গাছটি এরপর বড় হলে তার ফল ও ফুল হতে শুরু করে। রুদ্রাক্ষ নামে পরিচিত সেই ফলই।
সনাতন ধর্মে রুদ্রাক্ষ ধারণ এক অতি পবিত্র বিষয় বলে পরিগণিত হয়। রুদ্রাক্ষ লভ্য ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে ইন্দোনেশিয়ায়। এছাড়া আলাদা অধিষ্ঠিত দেবতাও আছে প্রতিটা রুদ্রাক্ষের। কোন রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে কি ফল পাওয়া যায় জেনে নিন।
একমুখী রুদ্রাক্ষঃ স্বয়ং শিব এই রুদ্রাক্ষের অধিষ্ঠিত দেবতা। সকল পাপ বিনষ্ট হয় এই রুদ্রাক্ষ ধারণে। গ্রহ রবি এর নিয়ন্ত্রক। তারা এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে সুফল পাবেন যারা ক্ষমতা লাভ করতে চান।
দ্বিমুখী রুদ্রাক্ষ: হরপার্বতীর দ্যোতক এই রুদ্রাক্ষ। স্ত্রী-লোকেদের ক্ষেত্রে দ্বিমুখী রুদ্রাক্ষ পরম উপকারী। স্বাস্থ্য বর্ধক ও গর্ভরোধক হিসাবে মানা হয় এই দ্বিমুখী রুদ্রাক্ষকে। জনপ্রিয় স্বয়ং সম্পুর্ন আর দৈব পুজার অনুরাগী হয়ে থাকে এই রুদ্রাক্ষ ধারণকারী ব্যক্তি।
তিনমুখী রুদ্রাক্ষ- অগ্নিদেবের রুদ্রাক্ষ বলা হয় একে। ব্যক্তির সমস্ত ইচ্ছে শীঘ্র পুরো হয় এটি ধারণ করলে। একে ওম ক্লীং নম: মন্ত্র জপ করে ধারণ করা উচিত।
চার মুখী রুদ্রাক্ষ: এটি সাক্ষাৎ ব্রহ্মার রুদ্রাক্ষ। ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ লাভ হয় যা ধারণ করলে। একে ধারণ করতে হয় ওম হ্রীং নম: মন্ত্র জপ করে।
পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষ: কালাগ্নি রুদ্র অধিষ্ঠাতা দেবতা। নিয়ন্ত্রক গ্রহ বৃহস্পতি। এই রুদ্রাক্ষ যাঁরা ধারণ করেন, নিজের সমস্ত সমস্যা থেকে তাঁরা মুক্তি পান। এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করা উচিত ওম হ্রীং নমঃ মন্ত্র জপের সঙ্গে।
এছাড়াও আরো প্রকারভেদ রয়েছে বহু রুদ্রাক্ষ এর। সর্বদিকে সমান, উঁচু -নীচু, আঁকা -বাঁকা নয় যেই সমস্ত রুদ্রাক্ষ, সর্বশ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয় সেই রুদ্রাক্ষকেই। খুব ভাল কোনও রকম ছিদ্র বিহীন, উজ্জ্বল ও ভারী রুদ্রাক্ষ।