মানুষ সুখ প্রত্যাশী। কিন্তু সব সময় সুখের অনুভূতি সমান হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলেন মানুষের মনের সুখ আসলে একটি আপেক্ষিক বিষয়। তবুও মানুষ নিজের জীবনে সুখ-দুঃখের হিসাব করে বেড়ায়। প্রত্যেকেরই দাবী জীবনের অমুক সময়টা সুখে কেটেছে। বা এই সময়টা দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে গেছি।
তবে বিশেষজ্ঞরা নিজেদের এক সমীক্ষার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন কিছু তথ্য যা সুখ আর অসুখের অনুভূতি গড় বয়স সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি করে। জানেন কোন বয়সে মানুষের জীবনে সুখ চরমে থাকে? ইংল্যান্ডের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স রিসার্চ (Office for National Statistics research) অনুসারে, পঁয়ষট্টি (৬৫) থেকে ঊনআশি (৭৯) বছর বয়সীরা হচ্ছেন সবচেয়ে সুখী বয়সের গ্রুপ।
পুরো ব্রিটেন জুড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্কদের উপর একটি সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে যে জীবন সন্তুষ্টি, সুখ এবং জীবন সার্থক এমন অনুভূতি সবই এই ৬৫ থেকে ৭৯ বছরের বয়সের সীমায় পৌঁছে হয়েছে।
কিন্তু ৪৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী ব্যক্তিরা জীবনের সন্তুষ্টির সর্বনিম্ন স্তরে থাকেন। পাশাপাশি এই বয়সকালে মানুষের মধ্যে চিন্তা বা উদ্বেগ সবচেয়ে বেশি কাজ করে। গবেষকরা এমন মনের সুখ না থাকার কারণ দেখাতে গিয়ে কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন। তাদের মতে এই বয়সের মধ্যে কম সুখ এবং মানসিক অস্থিরতা থাকার সম্ভাব্য কিছু কারণ হতে পারে একই সময়ে নিজের বাচ্চাদের মানুষ করার চাপ, তাদের পড়াশুনা বা আনুষঙ্গিক সব কিছুর দায়িত্ত্ব সঠিক ভাবে পালন। সাথে সাথে এই সময়ে বাবা মার বয়স হতে থাকে আর তারা আস্তে আস্তে নির্ভরশীল হতে শুরু করে। তাই বৃদ্ধ বাবা-মায়ের শরীরের যত্ন নেওয়া দায়িত্বও থাকে। সাথে থাকে কর্মব্যস্ততা। তাই অফিস আর বাড়ি এই দুয়ের চাপেই ৪৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সীরা সর্বাধিক কম সুখী হন।
সমীক্ষা তুলে ধরেছে এই বয়সসীমা পার করলে মানুষের সুখের মাত্রা বাড়ে। বিশেষ করে ৬৫ থেকে ৭৯ বছর পর্যন্ত তাদের এ সুখের মাত্রার পরিমাণ বেশ ভালো থাকে। এই সময়ে নানা দায় দায়িত্বের বোঝা থেকে মুক্তি পায় মানুষ। কর্মজীবনের অবসরও সুখের পরিমাণের উপর কাজ করে। চিন্তা বা উদ্বেগ কমে। বয়স এর থেকে আরো বাড়লে অবশ্য নানা শরীরে স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়, যা সুখের মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। সমীক্ষা এও দেখায় পুরুষরা মহিলাদের তুলনায় গড়ে কম সুখী বা সন্তুষ্ট।