বহু বছর আগে থেকেই বাড়ির বড়রা বলে আসেন খেয়ে উঠেই শুয়ে পড়া ঠিক নয়। বরং কিছুক্ষণ বসে থাকুন। আর যদি হাঁটাহাঁটি করতে পারেন তাহলে খুব ভালো। এমনকী বিশেষজ্ঞরাও বলেন খাওয়া সেরে যদি ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন তাহলেও ভালো। বিশেষত রাতের খাবার খাওয়ার পর। এতে হজম ভালো হয়। গ্যাস, অম্বলের কোনও সমস্যা হয় না। আমরা অনেকেই জানি যে রাতে এই হজমের সমস্যা বাড়ে। কিন্তু খাওয়ার পর হাঁটলে কি সত্যিই সমাধান হয়? জেনে নিন কী বলছে গবেষণা।
খাবার সব সময় চিবিয়ে খাওয়ার কথা বলা হয়। আর চিবিয়ে খাওয়ার খাওয়ার পর অর্থাৎ খাবার মুখে টুকরো হওয়ার পর তা লালারসের সঙ্গে মিশে হজম উপযোগী হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে খাবার থেকে আমরা প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পেয়ে থাকি। আর খাবার ছোট ছোট টুকরো হয়ে লালা রসের সঙ্গে মিশে শরীরের বিভিন্ন অন্ত্রে আসে। সেখান থেকেই হজম প্রক্রিয়া চলে। আর এই খাবার স্থানান্তর যত দ্রুত হবে ততই হজম কিন্তু ভালো হয়। স্থানান্তরণ প্রক্রিয়া যত দেরকি হবে ততই কিন্তু গ্যাস, অম্বলের সমস্যা বাড়বে। অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা বাড়ে। তবে খাবারের পর ৩০ মিনিট হাঁটা, হালকা ব্যায়াম এসবের মধ্যে থাকলে অন্যান্য সমস্যাও দূরে থাকে। এছাড়াও যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাঁরা যদি নিয়মিত খাওয়ার পর হাঁটেন তাহলেও তাঁদের সমস্যার সমাধান হবে।
গবেষণা বলছে খাওয়ার পর হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এতে যে শুধু হজম ভালো হয় তাই নয় ডায়াবিটিসের জন্যেও খুব উপকারী। তাই যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে তাঁদেরও প্রতিদিন খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস থাকলে ভালো। নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ ওটাগোর গবেষণায় বলা হয়েছে, যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে তাঁরা যদি রাতে খাওয়ার পর ৪০ মিনিট হাঁটতে পারেন তাহলেকিন্তু ডায়াবিটিস থাকবে নিয়ন্ত্রণে। সেই সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার কম খেতে হবে। গ্লুকোজ ভেঙেই কিন্তু শরীরে শক্তি আসে। শক্তির প্রধান উৎস হল এই গ্লুকোজ। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়লে নানা রকম শারীরিক সমস্যা আসে আর যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে তাঁদের জন্য রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়তে দেওয়া একেবারেই ঠিক নয়।
তবে একদম খাবার খেয়েই হাঁটতে বেরিয়ে পড়বেন এমন কিন্তু নয়। এতে বদহজম, অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা আরও বাড়ে। বরং খেয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর হাঁটতে যান। তবে খুব বেশি জোরে হাঁটবেন না। মাঝারি গতিতে হাঁটুন। যাঁরা অতিরিক্ত এক্সসারসাইজ করেন তাঁদেরও কিন্তু গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টেও সমস্যা হয়। কারণ পেশিগুলোতে অতিরিক্ত বেশি রক্ত সঞ্চালন হয়। এতেও কিন্তু হজমের সমস্যা বাড়ে।