বিভিন্ন রাজ্যকে কেন্দ্র পরামর্শ দিয়েছে যে ভারতে প্রস্তুত করোনার দুই ভ্যাকসিন, কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাকসিনের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মধ্যেকার সময়সীমা বাড়ানো হোক। কেন্দ্র থেকে মেলা পরামর্শ অনুযায়ী পূর্ব নির্ধারিত সময়সীমা, প্রথম ডোজ গ্রহণের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের পরিবর্তে এখন প্রায় ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজটি নিতে বলা হয়েছে, এই নিয়ে বয়স্ক নাগরিকদের অনেকের মধ্যেই বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। কারণ হটাৎ পরিবর্তন হওয়া সময়সীমা অনুযায়ী অনেকেই ৬ সপ্তাহ পরে ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর তার কার্যকারিতা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
যেমন কর্ণাটকের বাসিন্দা ৬১ বছর বয়সী শ্রীধর বলেন, ‘আমরা ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের ভেতরে দ্বিতীয় ভ্যাকসিনের ডোজ নিয়েছি কিন্তু পরে কেন্দ্রের পরামর্শে দেখা যায় ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় কোভিড ভ্যাকসিন ডোজ নেওয়ার কথা, যা বিভ্রান্ত করছে।’ ভেলোরে অবস্থিত ক্রিষ্টান মেডিক্যাল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডক্টর টি জেকব জন (T. Jacob. John) জানিয়েছেন, কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নিতে কিছু বিলম্ব হলেও কোনও সমস্যার কারণ নেই। তিনি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন এর। বলেছেন, ‘৪ সপ্তাহের ব্যবধানের পরে এটি যে সুরক্ষার বলয় বানায় তা সেই রোগের মারাত্মক অবস্থার তুলনায় প্রায় ১০০ শতাংশ। তবে তা হাল্কা এবং মাঝারি কোভিডের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ নয়। তবে ভ্যাকসিনের ব্যবধান বাড়িয়ে যদি ১২ সপ্তাহে করে দেওয়া হয়, তবে হাল্কা থেকে মাঝারি রোগের বিরুদ্ধে কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পাবে।’
ডাঃ জন জানান, ‘এখনও অবধি যা জানা গিয়েছে যে প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ক্ষেত্রে যদি এক বছরও দেরি হয় তাও প্রথম ডোজের কার্যকরিতা কম হবে না। তবে এমন অবস্থায় চার সপ্তাহের ব্যবধান আদর্শ। তবে যদি ভ্যাকসিন সরবরাহ করা নিয়ে কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তবে দেরি করা যেতে পারে যাতে করে আরও বেশি মানুষ যাতে প্রথম ডোজ পায়।’ তিনি সাথে সাথে এও বলেন, ‘যদি কেউ কোভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নিতে না পারেন যান তবে তা এক বছরের মধ্যে নেওয়া যেতে পারে।’
প্রসঙ্গত নানা রাজ্যেই ভ্যাকসিনের যোগান নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে ভ্যাকসিনের ভাড়ার শূন্য থাকার কারণে অনেক রাজ্যে সঠিকভাবে ভ্যাকসিনেশনও করা যাচ্ছে না। কেন্দ্র যদিও ইতিমধ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিনামূল্যে রাজ্যগুলিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ১৯২ লক্ষ টিকা পাঠাবে। এছাড়াও ২০০ কোটির বেশি ভ্যাকসিনের ডোজ তৈরি করার কথা বলেছে ভারতে আগামী পাঁচমাসের মধ্যে।