শহর অঞ্চলে অনেক মানুষের কাছে পরিচিত না হলেও গ্রামবাংলায় শাপলা ফুল সুপরিচিত। একটু শহর থেকে বেরিয়ে পাড়াগাঁয়ের দিকে গেলে খাল বিল পুকুর ডোবা ইত্যাদি নানা জায়গায় ফুটে থাকতে দেখা যায় এই শাপলা ফুল। শাপলা ফুল অনেকটা পদ্ম ফুলের মতন জলে জন্মায়। ইংরেজিতে একে ডাকা হয় ওয়াটার লিলি নামে। জলজ ফুল শাপলা ফুল হলেও এর ব্যবহার সবজি বা তরকারিতে হয়ে থাকে। বহু মানুষের কাছেই শাপলার সবজি বেশ পছন্দের। কিন্তু অনেক মানুষেরই জানা নেই সহজলভ্য এই শাপলা ফুলের অসামান্য গুনাগুন। শাপলা ফুল পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। অন্যান্য শাক-সবজির চেয়ে শাপলা ফুলের পুষ্টিগুণ কোনো অংশে কম না বরং কিছুটা বেশি।
চিকিৎসকদের মতে গুনে সমৃদ্ধ শাপলায় আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম, মিনারেলস, ক্যালোরি প্রোটিন, শর্করা ও নানা প্রয়োজনীয় এনজাইম যা বহু রোগ নিরাময়ে দরকারি। প্রতি ১০০ গ্রাম শাপলা ফুলে মিনারেলস আছে ১.৩ গ্রাম, ফাইবার ১.১ গ্রাম, কালোরি আছে ১৪২ কিলো, প্রোটিন ৩.১ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৩১.৭ গ্রাম এবং ক্যালসিয়াম ৭৬ মিলিগ্রাম।
জানুন কী কী রোগ নিরাময়ে কার্যকরী শাপলা..
• ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ভীষণ উপকারী শাপলা ফুল। এই ফুল ইনসুলিনের মাত্রা স্থিতিশীল রেখে রক্তে শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
• শাপলা ফুল ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। শাপলাতে উপস্থিত গ্যালিক এসিড এনজাইম ক্যানসার প্রতিরোধ কার্যকরী। মস্তিষ্ক শীতল রাখতেও সাহায্য করে শাপলা। শাপলাতে মজুত ফ্লেভনল গ্লাইকোসাইড ব্রেনে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রেখে মাথা ঠাণ্ডা রাখে।
• শাপলা দেহ কে শীতল রাখে, হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায় ও পিপাসা নিবারণ করে। প্রস্রাবের সময় জ্বালা অনুভব হলে, কী আমাশয় রোগ এবং পেট ফাঁপা নিরাময়ে শাপলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
• হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা কম করতে শাপলা ফুলের অপরিহার্য বলে মানা হয়। এতটাই উপকারী শাপলা। বিশেষজ্ঞদের মতে পাঁচ গ্রাম গোলাপ ফুল আর দশ গ্রাম শাপলা ফুল দুই কাপ জলে দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে স্বাদ মত চিনি মিশিয়ে রোজ দুবার নিয়মিতভাবে ১ মাস সেবন করলেই নিজেই ফল বুঝতে পারবেন।