ইলিশ মাছের স্বাদে আস্বাদে মুগ্ধ আপামর বাঙালি। সমুদ্রের মাছ হলেও বর্ষাকালে নদীতে ডিম পারতে আসা ইলিশ মাছ খেতে অতুলনীয় বলে মাছের মধ্যে রাজা হিসেবেও পরিচিত এই ইলিশ মাছ। সর্ষে ইলিশ, ইলিশ ভাজা , ইলিশের তেল, ইলিশ ভাপা, ইলিশ পাতুরি, দই ইলিশ, ইলিশের টক, ভাজা ইলিশের ডিম , বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে ইলিশের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু জানেন কি এই মাছের অসাধারণ পুষ্টিগুণ? শুধু স্বাদে নয় স্বাস্থ্য এর ক্ষেত্রেও রাজা ইলিশ। রইল ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণের ১০টি উপকারিতা। জেনে নিন…
• একেবারেই কম স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ হার্ট- ইলিশ মাছে। অন্য দিকে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায়। ফলে হার্ট থাকে সুস্থ।
• রক্ত সঞ্চালন- শরীরে ইকসিনয়েড হরমোন তৈরি রুখতে পারে সামুদ্রিক মাছে থাকা ইপিএ ও ডিএইচএ ওমেগা-থ্রি-অয়েল। রক্ত জমাট বেঁধে শিরা ফুলে যায় এই হরমোনের প্রভাবে। শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয় ইলিশ মাছ খেলে। আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে থ্রম্বসিসে।
• অস্টিওআর্থারাইটিসের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে বাত- ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের সঙ্গে। বাতের ব্যথা, গাঁট ফুলে গিয়ে যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায় প্রতি দিনের ডায়েটে সামুদ্রিক মাছ থাকলে।
• চোখ- চোখের স্বাস্থ্য ভাল থাকে তেলযুক্ত মাছ খেলে, চোখ উজ্জ্বল হয়। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বয়সকালে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসার মোকাবিলা করতে পারে। রাতকানার মোকাবিলা করতেও সাহায্য করে ইলিশ মাছের মধ্যে থাকা ভিটামিন এ ।
• প্রয়োজনীয় খনিজ- আয়ডিন, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, পটাশিয়াম ইলিশ মাছে রয়েছে। আয়ডিন, সেলেনিয়াম উত্সেচক ক্ষরণে সাহায্য করে, থায়রয়েড গ্ল্যান্ড সুস্থ রাখে, যা ক্যানসারের মোকাবিলা করতে পারে। এ ছাড়াও ইলিশ মাছ ভিটামিন এ ও ডি-র উত্কৃষ্ট উত্স।
• ফুসফুস- সামুদ্রিক মাছ ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে কার্যকরী বহু গবেষণায় দেখা গিয়েছে। শিশুদের ক্ষেত্রে ইলিশ মাছ হাঁপানি রোধ করতে পারে। তাঁদের ফুসফুস অনেক বেশি শক্তিশালী হয় যাঁরা নিয়মিত মাছ খান।
• অবসাদ- অবসাদের মোকাবিলা করতে পারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। জানেন ইলিশ মাছ সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডার (SAD), পোস্ট ন্যাটাল ডিপ্রেশন কাটাতে পারে ।
• ত্বকের যত্নে-বর্তমান সময়ে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির হাত থেকে ওমেগা ফ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বককে রক্ষা করে। নিয়মিত মাছ খেলে ত্বক একজিমা, সোরেসিসের হাত থেকে রক্ষা পায়। কোলাজেনের অন্যতম উপাদান ইলিশ মাছে থাকা প্রোটিন। ত্বক টাইট ও নমনীয় রাখতে সাহায্য করে এই কোলাজেন।
• পেটের যত্নে- পেটের সমস্যা অনেক কম হয় ডায়েটে তেলযুক্ত মাছ থাকলে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যসিড আলসার, কোলাইটিসের হাত থেকে রক্ষা করে।
• ব্রেন- ফ্যাট দিয়ে মস্তিষ্কের ৬০ শতাংশই তৈরি। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যার অধিকাংশই। যাঁরা নিয়মিত মাছ খান, বয়স কালে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অনেক কম দেখা যায় তাঁদের মধ্যে। ডিএইচএ শিশুদের মস্তিষ্কের গঠনেও সাহায্য করে। ইলিশ মাছ অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার(ADHD) রোধ করতে পারে। মনযোগ বাড়ায় স্মৃতিশক্তি, পড়াশোনায়।