ছত্তিশগড়ের অম্বিকাপুর জেলা থেকে এক ভয়ঙ্কর খুনের ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে এক নাবালক তার বাবা-মাকে হত্যা করে এবং তাদের লাশ বাড়িতেই পুঁতে দেয়। ঘটনাটি উদয়পুর থানার অন্তর্গত খোঁধালা টিকরাপাড়া গ্রামের। খবর পেয়ে শনিবার সকালে পুলিশ ও ফরেনসিক বিভাগের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্তে নামে।
নাবালক অভিযুক্ত কে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ তার দেখিয়ে দেওয়া স্থানগুলিতে খুঁড়ে মাটিতে পুঁতে রাখা মৃতদেহগুলো বের করে আনে। তিনি জানান, ৫০ বছর বয়সী জয়রাম সিং তার ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী ফুলসুন্দরী বাই এবং এই বাড়িতে থাকতেন। তার দুই ছেলে এক মেয়ে। মেয়ে বিবাহিত এবং বড় ছেলে কাজের সূত্রে বাড়িতে ছিলেন না। এ সময় ছোট ছেলের সঙ্গে বাবা-মায়ের কোনো বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এই তর্কবিতর্ক এতটাই বেড়ে যায় যে ছেলে চাষের কাজের ধারালো হাতিয়ার দিয়ে দুজনকেই প্রাণে মেরে ফেলে।
বাবা-মাকে হত্যার পর নাবালক ওই ছেলেটি তাদের মৃতদেহ বাড়ির মধ্যেই দুটি জায়গায় প্রায় এক ফুট গর্ত খুঁড়ে কবর দিয়ে দেয়। বেশ কিছু দিন পর প্রচন্ড গন্ধ বের হতে থেকে। বাড়ির সবকটি ঘরেই দুর্গন্ধ ছিল কিন্তু অভিযুক্ত নাবালক সেই বাড়িতেই স্বচ্ছন্দ ভাবেই বাস করছিল। সকাল-সন্ধ্যা বাড়ির গবাদিপশুকে চারা-জলও দিত। যে বাড়ির যে জায়গায় নাবালক তার বাবা-মায়ের মৃতদেহ পুঁতে দিয়েছিল সেই একই জায়গায় সে খাবার রান্না করে খেত। শুধু তাই নয়, ওই নাবালক ছেলে একই জায়গায় বিছানা করে ঘুমাতোও।
ঘটনাটি নাবালকের জামাইবাবু জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। একই সঙ্গে নাবালক ছেলেকেও পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যেখানে সে তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছিল সেখানে গোবর লেপে রক্তের দাগ মুছে দেওয়া হয়েছিল। সব কাপড় ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নেওয়াও হয়েছিল। মাকে খুন করার স্থানের মাটি খুঁড়ে শুকনো হয়েছিল রক্তের দাগ মোছার জন্য। তাই সেইভাবে রক্ত দেখা না গেলেও তদন্তে বাড়ির কিছু জিনিসপত্রে রক্তের দাগ পায় পুলিশ।
উদয়পুরের এসডিওপি অখিলেশ কৌশিক জানিয়েছেন, মৃতের জামাই তাঁকে এই খবর জানিয়েছেন। বর্তমানে অভিযুক্ত নাবালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অপরাধী শিশু পুলিশকে জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বোনের বিয়ে নিয়ে পরিবারে অনেক তোলপাড় হয়েছে। বড় ভাইয়ের বিয়ে হয়েছে এক বছর আগে। সে তার স্ত্রীকে নিয়ে অন্য গ্রামে থাকে। বাড়ির কেউ তাকে বিশ্বাস করেনা। কেউ তার যত্ন নেয়নি। মা-বাবার ভালোবাসাও পায়নি সে। মাঝখান থেকে তাকে সবাই পাগলা বলতো। বলত সে পাগল, তাই বাবা-মাকে হত্যা করে দিয়েছে। অভিযুক্ত বড় ভাই এবং জামাইবাবু কে বেশি প্রাধান্য দিতে বাবা-মা। যার কারণে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্ষিপ্ত বাবা মাকে মেরে ফেলে। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের ধারণা ছেলেটি মানসিকভাবে হয়ত অসুস্থ। রাগের বশবর্তী হয়ে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। অপরদিকে নিহতের বড় ছেলে জানান, ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তাকেও তার বোনের বর ফোনে বিষয়টি জানান।