মানুষটা অন্ধ। ভিক্ষে করে খান। অনেক কষ্টে কয়েক দশক ধরে কিছু পয়সা জমিয়ে ছিলেন। যাতে করে বুড়ো বয়সে কাজে আসে। তিলে তিলে সঞ্চিত সেই অর্থ ব্যাঙ্কে জমা দিতে গিয়ে শুনছেন, পুরোটাই নাকি জলে! কেন? যেহেতু ওই টাকা আজ মূল্যহীন। গোটা ঘটনায় মাথায় হাত পড়েছে বৃদ্ধের।
বৃদ্ধের নাম চিন্নাকান্নু। বাড়ি তামিলনাড়ুর কৃষ্ণাগিরি জেলায়। গ্রামের নাম চিন্নাগৌন্দানুর। এলাকাতেই ভিক্ষে করতেন চিন্নাকান্নু। সারাদিনের উপার্জনের কিছু টাকা সরিয়ে রাখতেন ভবিষ্যতের জন্য। বর্তমানে সেই টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার। এই টাকাই ফিরিয়ে দিয়েছে ব্যাঙ্ক। কেন? আসলে নিজের অ্যাকাউন্টে পুরোনো পাঁচশো ও হাজার টাকার নোটে ৬৫ হাজার টাকা জমা দিতে গিয়েছিলেন চিন্নাকান্নু। যে অর্থ অর্থহীন হয়ে গেছে আজ থেকে পাঁচবছর আগে। সবচেয়ে আশ্চর্যের হল বৃদ্ধের বক্তব্য। তিনি জানিয়েছেন, ডিমানিটাইজেশন শব্দটাই কখনও শোনেননি। এই বিষয়ে বিন্দুবিসর্গ জানেন না তিনি। কিন্তু এখন কী করা?
স্থানীয়দের সাহায্যে ব্যাঙ্কে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন চিন্নাকান্নু। সরকার বাহাদুরের কাছে তার আর্জি, এই টাকা যাতে টাকাই থাকে, যাতে করে তা মূল্যহীন কাগজে পরিণত না হয়, তার ব্যবস্থা করা হোক। না হলে পথে বসা মানুষটার শেষ সম্বলটুকুও যে থাকবে না। ইতিমধ্যে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার চিন্নাকান্নুর আবেদন জেলার রেভিনিউ অফিসারের কাছে পাঠিয়েছেন। এই বিষয়ে আরবিআইকেও অবগত করা হয়েছে। তবে এই আবেদন-নিবেদনে কতটা কী হবে তা নিয়ে ধন্দে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। যেহেতু আইনত পুরোনো নোট ফিরিয়ে দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ।
মানুষটা অন্ধ। ভিক্ষে করে খেতেন। বয়সের কারণে শরীর আর দেয় না। সঞ্চয়ই ছিল সম্বল। মানুষটাকে সকলে বোঝাচ্ছে, সেই সম্বল এক রাত আটটায়, প্রধানমন্ত্রী মোদির এক ঘোষণায় মুহূর্তে মিলিয়ে গেছে। কিন্তু কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না চিন্নাকান্নুর।