এই রাজ্যসহ সারা ভারতে ক্রমেই উদ্বেগ বাড়ছে ওমিক্রণ সংক্রমণ। বহুবার নিজের জিনের সিকোয়েন্সে পরিবর্তন ঘটিয়ে করোনা ভাইরাসের নতুন প্রজাতি হানা দিয়েছে নতুন রূপে। ওমিক্রন সংক্রমনের দ্রুত বৃদ্ধি ভাঁজ ধরাচ্ছে চিকিৎসাবিদদের কপালে। এমন অবস্থায় বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সাধারন মানুষকে সমস্ত প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য বার বার সতর্ক করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, নতুন কোভিড ভেরিয়েন্টটি সাধারণ জনগণের জন্য ‘খুব বেশি’ ঝুঁকি তৈরি করে চলেছে এবং বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসেবা এর কারণে ভেঙ্গে পড়তে পারে।
নতুন এই ঝুঁকির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গবেষক এবং চিকিৎসাবিদরা এই নতুন প্রজাতি ওমিক্রন বিষয়ে কি কি নতুন বিষয় সামনে আসছে এই ব্যাপারে নজরদারি চালাচ্ছে। যদিও নতুন কোভিড ভেরিয়েন্টের সাথে যুক্ত বেশিরভাগ উপসর্গ আগের করোনা প্রজাতিগুলোর মত একই থাকে, ওমিক্রন দ্বারা সংক্রামিতদের মধ্যে কিছু নতুন উপসর্গ লক্ষ করা গেছে, এমনকি সম্পূর্ণ টিকা পাওয়ার পরেও।
আলফা, বিটা, ডেল্টার চেয়েও বেশী ধূরন্ধর ওমিক্রন। কারণ করোনাভাইরাসের অন্য প্রজাতিগুলোর সাপেক্ষে ওমিক্রন নিজেকে বেশি বদলাতে পেরেছে (মিউটেশন)।
কোভিডের অন্যান্য ভেরিয়েন্ট এর সংক্রমনের মতোই ওমিক্রন সংক্রমণে উপসর্গ হিসেবে দেখা যায় মৃদু জ্বর, নাক দিয়ে জল গড়ানো, গলা খুসখুস করা, গলা ব্যথার মতো বেশ কিছু উপসর্গ। প্রাথমিক ভাবে বিশেষজ্ঞদের মত, উপসর্গ খুব সামান্য হলেও সংক্রমণ ক্ষমতায় বাকি ভেরিয়েন্ট গুলিকে সহজেই পেছনে ফেলে দিতে পারে ওমিক্রন। পাশাপাশি, ওমিক্রন আক্রান্তদের মধ্যে দু’টি আলাদা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে যা আগে দেখা যায়নি বলেও মত তাঁদের।
আগে করোনা আক্রান্ত হলে জ্বর আসা বা সর্দি কাশি, স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি চলে যাওয়ার মতো উপসর্গগুলি দেখা যেত প্রাথমিকভাবে। কিন্তু ওমিক্রন এর ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হচ্ছে না এই জাতীয় সমস্যা। তার জায়গায় মাথা যন্ত্রণা, নাক থেকে জল পড়া, হাঁচি হওয়া বা ক্লান্ত লাগার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে অনেক বেশি।
তবে এই উপসর্গগুলি ছাড়াও আরও দু’টি নতুন উপসর্গ ওমিক্রন আক্রান্তদের মধ্যে বেশ প্রকট বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যবিদরা। এই দু’টি উপসর্গ হল, গা বমি আর খিদে চলে যাওয়া। বেশ কিছু ক্ষেত্রে আবার দেখা যাচ্ছে, হাতে-পায়ের চামড়ায় ঘা, ক্ষত ও চুলকানির মতো সমস্যাও।
দু’টি টিকার ডোজ নিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যেও এই উপসর্গগুলি দেখা যাচ্ছে। কাজেই টিকার ডোজ সম্পূর্ন হলেও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কিন্তু রয়েই যাচ্ছে। তবে যাঁরা টিকা নিয়েছেন, তাঁদের ওমিক্রন ভীষণ ভাবে প্রভাবিত করতে পারবে না বলেই ভরসা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সতর্ক থাকা ছাড়া উপায় নেই। তাই সামান্যতম উপসর্গ দেখা দিলেও কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই উচিৎ বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।