যে বয়সে ছোট ছোট শিশুরা একা বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পায়, সেই বয়সে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের কনৌজের দুই বাচ্চা মেয়ে তাদের বাড়ি থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে পালিয়ে যায় যাতে তাদের স্কুলে যেতে না হয়। পথিমধ্যে পুলিশ তাদের জিজ্ঞেস করল, তোমার বাবা-মা কোথায়? তাই দুজনেই বলতে শুরু করে আমাদের মা বাবা মারা গেছে, কাকা আমাদের মারধর করে তাই আমরা বাড়ি থেকে পালিয়ে দিদার বাড়িতে যাচ্ছি।
কিন্তু আসল ঘটনা হল এই বাচ্চাদের বাবা-মা দুজনেই বেঁচে আছেন এবং এই দুই শিশুর স্কুলে যেতে প্রবল অনীহা। এ কারণে দুজনেই কানপুরে চলে যান। কানপুর পুলিশ যখন দুজনকেই ধরে পরিবারের সদস্যদের জানায়, তখনই সামনে আসে পুরো ঘটনার সত্যতা।
কনৌজের গুরসাহাই গঞ্জের বাসিন্দা প্রীতির দুটি বাচ্চা মেয়ে রয়েছে। ৫ বছরের খুশি এবং ৩ বছরের রশ্মি। প্রীতির স্বামী ছুত্তন সিং একজন প্রাইভেট বাস চালক। ছত্তন তার মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। শনিবার শিশু দুটিকে স্কুলে যেতে বলা হয়। কিন্তু দুজনেই বাড়ী থেকে বের হয়ে শাহগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে সোজা কানপুর চলে আসেন।
তারা কানপুরের রাওয়াতপুর স্টেশনে নেমে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে শুরু করে। দুটি অল্প বয়সী বাচ্চাকে এইভাবে ইতি উতি ঘুরতে দেখে অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগে। সবাই জিজ্ঞেস করতে লাগে বাচ্চা দুটিকে তারা কোথায় যাচ্ছে। উত্তরে এক বোন বলতে শুরু করে, ‘আমাকে আমার দিদার বাড়িতে যেতে হবে, আমার বাবা মা নেই, তারা মারা গেছে, কাকা আমাদের ঘরে আটকে রাখতেন, তিনি আমাদের বাড়িতে মারতেন, তাই আমরা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি।’ তারা জানান, তাদের বাবা মারা গেছেন ৩ বছর আগে আর মা মারা গেছেন ১ বছর আগে।
এদিকে সখী পুলিশ চৌকিতে কেউ এই তথ্য দিলে সেখান থেকে মহিলা কনস্টেবল কুসুম ভাদৌরিয়া দুজনকেই পুলিশ চৌকিতে নিয়ে আসেন। তিনি গুরসাহাইগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিলে জানা যায়, দুই মেয়েই পড়ালেখা না করার কারণে স্কুল থেকে পালিয়ে গেছে, তাদের বাবা-মা দুজনই বেঁচে আছেন। মেয়ে দুটিকে তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এত ছোট দুটি মেয়ের এহেন কীর্তিতে সকলেই হতবাক।