হিন্দু সমাজে চালু আছে বহু তিথি পালনের রীতি নীতি। বারো মাসে তেরো পার্বণ আরো কত কী! তেমনই একটি উল্লেখযোগ্য তিথি হচ্ছে উৎপন্না একাদশী (Utpanna Ekadashi)। এই তিথিটি বিষ্ণু ভক্তদের কাছে ভীষণ পবিত্র একটি একাদশী তিথি। কেননা শাস্ত্র এবং পুরান মতে এই তিথিতেই শ্রীবিষ্ণুর শরীর থেকে জন্ম নিয়েছিলেন দেবী একাদশী। মাঘ মাসে একাদশী তিথি অথবা কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষে এই উৎপন্না একাদশী পালিত হয়। এই একাদশীকে আবার গৌন একাদশীও বলা হয়। এদিন শ্রী বিষ্ণুকে কেশব রূপে পুজো করা হয়।
তিথি অনুযায়ী এই বছর আজকের দিনে পালিত হচ্ছে উৎপন্না একাদশী তিথি। কি এই তিথির মাহাত্ম্য? বলা হয় এই তিথিতে বিষ্ণুর শরীর থেকে জন্ম নিয়েছিল দেবী একাদশী। এই একাদশীর ঠিক ১৫ দিন পরে পালিত হয় উৎপন্না একাদশী (Utpanna Ekadashi)। ২০২১ সালের উৎপন্না একাদশী পালিত হচ্ছে ৩০ নভেম্বর। যারা শ্রীবিষ্ণুর পরম ভক্ত ও তার পুজো করে থাকে তারা এই দিন ভক্তি ভরে এই একাদশীর ব্রত পালন করে থাকেন। এদিন উপবাস করে শ্রী বিষ্ণুর পুজো করার রীতি আছে।
শাস্ত্র মতে, উৎপন্না একাদশীর দিন দেবী একাদশী (Lord Ekadashi) আবির্ভূত হন। পুরাণ অনুযায়ী দেবী একাদশী মুরাসুন নামক একটি রাক্ষসকে হত্যা করে ছিলেন। শ্রী বিষ্ণু (Lord Bishnu) যোগনিদ্রায় থাকাকালীন তাঁর শক্তি থেকে জন্ম হয় দেবী একাদশীর। পুরাণ অনুসারে, শ্রী বিষ্ণু যখন যোগ নিদ্রায় মগ্ন ছিলেন তখন মুরাসুন নামক অসুর ভগবান শ্রী বিষ্ণুকে আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময় বিষ্ণু তেজ থেকে জন্ম নিয়ে দেবী একাদশী হত্যা করেছিলেন মুরাসুনকে। তাই ভগবান বিষ্ণুর ভক্তদের কাছে এ দিনটি বিশেষ পূজনীয়।
এবছর তিথি নক্ষত্র অনুযায়ী উৎপন্না একাদশী পালিত হবে ৩০ নভেম্বর। ৩০ নভেম্বর ভোর ৪.১৩ মিনিটে লাগছে এই একাদশী তিথি। আর একাদশী ছাড়ছে ১ ডিসেম্বর সকাল ২.১৩ মিনিটে। সংসারের সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি বজায় রাখতে, কারো কোনো বন্ধন মুক্তির আকাঙ্খায় এবং কাঙ্খিত স্বাধীনতা লাভের আশায় এই তিথিতে বিষ্ণুর পুজো করা হয়। দক্ষিণ ভারতে এই তিথিটি বিশেষ ভাবে পালিত হয়।