জানেন এই পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে এমন এক মন্দিরে যেখানে পূজিত ঈশ্বরের নাম শুনলে অবাক হবেন। এই মন্দিরে ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় ভগবান!দৈবিক মতে পূজিতও হন। এমনই তাজ্জব মন্দিরের হদিস মিলেছে জলপাইগুড়ি শহরে।
পঞ্চমুখী হনুমান মন্দির শহরের প্রাচীন হনুমান মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম জলপাইগুড়ির মাসকলাইবাড়ি এলাকায়। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের একটি পূর্ণবয়ব মূর্তি এই মন্দির প্রাঙ্গণে আছে । যা পুরোনো কয়েক দশকের। কেবল তাঁর জন্মদিনেই নয় রোজই পুণ্যার্থীরা প্রণাম জানান ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের এই মূর্তিতে ও নানানভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ও গান্ধি জি’র প্রতিকৃতি এই মন্দিরের গর্ভগৃহের দেওয়ালে খোদিত আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধক করপাত্রী জী মহারাজ এই হনুমান মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। যিনি একজন প্রবল দেশপ্রেমিকও ছিলেন সাধনার পাশাপাশি। মন্দিরের গর্ভগৃহে নেতাজী, গান্ধিজি’র মূর্তি তাঁরই অনুপ্রেরণাতে খোদিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে এও জানা গিয়েছে, মূলত জলপাইগুড়ি শহরের কোনও এক স্থানে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তিটি কিন্তু মূর্তিটি এই মন্দির প্রাঙ্গণে স্থান পায়। পরবর্তীতে আর সরানো হয়নি এই মন্দির থেকে মূর্তিটি।
এ প্রসঙ্গে কৌস্তুভ বাগচী, জলপাইগুড়ির গবেষক বলেন, ‘স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ে গান্ধিজীকে বিহার, উওরপ্রদেশের অনেক মানুষ ভগবানের অবতার মনে করতেন। স্বাধীনতা পরবর্তী যুগেও । কিন্তু ভারত বা পশ্চিমবঙ্গে আর নেই মন্দিরে ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের নজির। তবে ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের অবদানকে অস্বীকার করার জায়গা নেই জলপাইগুড়ি সহ সমগ্র উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক উন্নয়ন ও স্বাধীনতা পরবর্তী উদ্বাস্তু পুনর্বাসনে। ডাঃ বিধান চন্দ্র পশ্চিমবঙ্গ সহ উওরবঙ্গের মানুষদের মনের মাঝে এই সব নানা কারণে যে স্থান অধিকার করে আছেন ,দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরে তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করাকে এরই প্রকাশ বলা যায় ।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের রূপকার বিধানচন্দ্র রায় রাজনৈতিক রোষের শিকার হয়েছিলেন।প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মূর্তিটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় পূর্ব বর্ধমান জেলায় রাজ্যের । একে-অপরকে মূর্তি ভাঙার ঘটনায় দোষারোপ করেও ছিলেন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী দল বিজেপি ।
স্বাধীনতার পরে বিধানচন্দ্র রায়ের ওই আবক্ষ মূর্তিটি স্থাপন করা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের শিল্পায়ন ও আধুনিকীকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার জন্য পূর্ব বর্ধমানের মানকর শহরে। সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায় কেউ বা কারাভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলে রেখেছে এবং ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তিটি
সে দিনের ঐ ঘটনায়। পশ্চিমবঙ্গে এ ধরনের ঘটনা যেমন রয়েছে তেমনি দেবতারূপে পূজা করার স্থানও রয়েছে সেই মনীষীদের।