Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

চূড়ান্ত অর্থাভাব! তাও ঘুঘনি বেঁচেই ছেলে মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করছেন ঘুঘনি দাদু

সংসারে আর্থিক অবস্থা একেবারে খারাপ, দারিদ্রতা সংসারে ভরপুর। নিজেদের কোনও স্থায়ী বাসস্থান না থাকায় এখনও ভাড়া বাড়িতেই থাকেন। কিন্তু তাও রায়গঞ্জ চৈতালী মোড় সংলগ্ন এলাকার ঘুঘনি দাদু বলে পরিচিত প্রকাশ রঞ্জন ভৌমিক তিন সন্তানকে উচ্চ শিক্ষিত করছেন শুধুমাত্র ঘুগনি বেচেই। সংসারে এতো অভাব যে দিনের ভাত জোগাড় করা দায়, যদিও সরকারি বার্ধক্য ভাতা পান তিনি, এদিন এমনটাই জানালেন তিনি। রোজ রাসবিহারী মার্কেট এলাকার চৈতালি ক্লাবের সামনে ভ্যান গাড়ি লাগান প্রকাশ বাবু, চিড়া-দই ২০টাকা, ডিম ১০টাকা, মুড়ি ঘুঘনি ২০টাকা দামে।

তিনি বলেন, ‘ চালের ব্যবসা করতাম লকডাউনের আগে। কিন্তু সেই ব্যবসায় তীব্র ক্ষতি হয় গতবছরের দীর্ঘ লকডাউনের ফলে। চাল দিতে অস্বীকার করে মহাজন। এখন এখানে ব্যবসা করি সকাল সাড়ে সাতটা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। বাড়ি ফিরে যাই তারপর ।বিকেলে ব্যবসা করার শক্তি বা সামর্থ্য পাই না বয়সের ভারে ।’ এই ঘুঘনি দাদুর ওপর নির্ভরশীল স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী, মাছ বিক্রেতারা। সবজি ব্যবসায়ী রতন মালাকার জানায়, সকালে না খেয়েই আসি বাড়ি থেকে।

সকালে ব্যবসা করতে পারি ঘুঘনি দাদু কোনো দিন চিড়া-দই, কোনো দিন ঘুঘনি মুড়ি দেন বলেই। আমাদের ভীষণ কষ্ট হয় উনি না থাকলে ।প্রায় সকলেই ঘুঘনি দাদুর খাবারের দিকে মুখাপেক্ষী স্থানীয় মাছ বিক্রেতাদের মধ্যে। তারা জানায়, উনি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার পৌঁছে দেন আমাদের সকলকে, নইলে অসুবিধা হত ভালো খাবার পেতে । যদিও দাদু প্রকাশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, এক জায়গায় দোকান দিত আগে বিক্রেতারা,ফলে অসুবিধা হত না খাবার তুলে দিতে। কিন্তু এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছে দোকানগুলো। তাই, অসুবিধা হয় সকলকে খাবার দিতে । তাঁর দাবি, দিনে ৪০০-৪৫০ টাকার বিক্রি হলেও দিনে ৬০/৭০ টাকা উপার্জন হয় এই ব্যবসা থেকে। এতে তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালানো কঠিন।

তবুও বড় মেয়ে প্রিয়াঙ্কা ভৌমিককে উত্তর বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে পড়াশোনা করিয়েছি এরই মধ্যে। এখন রায়গঞ্জ কোর্টে প্র্যাকটিস করার জন্য আপিল করেছে সে। প্রসেনজিৎ ভৌমিক একমাত্র সন্তান পড়াশোনা শেষ করতে না পেরে এখন টিউশনি করে। অর্থনীতি নিয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করলেও অপর কন্যা মুক্তা ভৌমিক অর্থের অভাবে আর পড়াতে পারছি না। কেউ একটু যদি সহযোগিতা করে, তাহলে বাকি পড়াশোনা করাতে পারব।’ সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন নিজে প্রাথমিক স্তরের পড়াশোনা শেষ করতে না পারলেও।

প্রকাশ বাবু বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী গায়ত্রী ভৌমিক ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় কোনো ঘাটতি রাখিনি নিজেরা না খেয়ে থাকলেও । ওরা জীবনে যদি দাঁড়াতে পারে, তাহলে নিশ্চিন্তে থাকতে পারব।

Related posts

বাংলার এই জেলায় প্রতি তৃতীয় দিনে একজন কৃষক আত্মহত্যার পথ বাছছেন, চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান

News Desk

এই রাজ্যের করোনা রোগীদের ৭০ শতাংশই ওমিক্রনে আক্রান্ত! চাঞ্চল্যকর দাবী রিপোর্টে

News Desk

প্রতি বছর প্রায় একই দিনে ভাদ্র সংক্রান্তির দিনই কেন হয় বিশ্বকর্মা পুজো! কারণ জানেন

News Desk