কোনোরকম প্রতিবন্ধী হওয়ার শংসাপত্র পায়নি মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের জন্য। টাকার অভাবের কারণে চিকিৎসা করাতে পারছে না ছেলের। তাই নিরুপায় হয়েই বাচ্চাকে তার মা বাবা চিকিৎসার অভাবের কারণেই শিকলে বেঁধে রেখেছেন।
ঘটনাটির বিষয়ে প্রকাশিত হয়েছে বাংলা সংবাদমাধ্যম প্রতিদিনে। মিডিয়া থেকে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী প্রশাসন সম্পূর্ণ উদাসীন দক্ষিণ দিনাজপুর (South Dinajpur) জেলার বালুরঘাটের বঙ্গী এলাকার পদ্মপুকুর পাড়ার ঘটনায়। ওই দরিদ্র পরিবার তাদের সন্তানের চিকিৎসা করিয়ে তার জীবন শিকল থেকে মুক্ত করতে চাইচ্ছে। নারায়ণ দাস নামে এই যুবকের পদ্মপুকুর পাড়ায় সরু গলির মধ্যে বাড়ি। ছেলের দুপায়ে শিকল আটকে রাখার কারণে খুব কষ্ট হয় তার। যদিও কিছু করার নেই তার মা বাবার। যদিও ঠিক এমন ছিল না নারায়ণের জীবনের প্রথম দিকটা। বাকি আর পাঁচটা ছেলে মেয়ের মতই বড় হয়ে উঠেছিল সে। কিন্তু সে আচমকায় এরকম হয়ে যায়।
মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে যায় তার। পেশায় টোটো চালক বাবা বাবলু দাস জমানো অর্থে প্রথমে স্থানীয়ভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতেন। পরবর্তীতে তার চিকিৎসা অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তার মানসিক রোগ দিন দিন বাড়তে থাকে। বাধ্য হয়েই লোহার শিকল আটকে দেন পরিবারের সদস্যরা ছেলের পায়ে। সেভাবেই তাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। বাবলু দাস বলছেন, যাতে কোনও অসুবিধা কিংবা ক্ষতি না হয়, পাড়া-প্রতিবেশীদের ছেলের পায়ে শিকল পরিয়েছেন তার জন্যই। আর যাতে সে অনেক দূরে চলে যেতে না পারে সেজন্যও আটকে রাখা হতো।
তাঁর কথায়, “তার সমস্ত রোজগার সামান্য টোটোর উপর। ছেলের চিকিৎসা করিয়েছিলাম একসময় পরিবারের খরচ চালিয়েও। কিন্তু হাতে টাকা নেই এখন। ছেলের একটি প্রতিবন্ধী কার্ডের করানোর জন্য অনেকের কাছে গিয়েছি। কিন্তু কোনও সাহায্য পাইনি কারও কাছ থেকেই।” এদিকে পরিমল কৃষ্ণ সরকার ওই এলাকা অর্থাৎ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর জানান, “ এমন আবেদন নিয়ে কেউ আসেনি আমার কাছে। যদি কেউ আসে সাহায্য চাইতে অবশ্যই করবো। আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব চিকিৎসার প্রয়োজনে।”