বছর একষট্টির এক বয়স্ক এক ভদ্রলোক খোদ নিজের বাড়ির পুকুরের জল ব্যাবহার করে তা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন গোটা বিশ্বকে। না কোনও সিনেমার দৃশ্য নয়, দক্ষিণ ভারতের কন্নড় জেলার বাসিন্দা সুরেশজি ঘটিয়েছে এমন অত্যাশ্চর্যক ঘটনা।
কর্নাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলার বাসিন্দা ৬১ বছর বয়সী কৃষক সুরেশ নামের এই কৃষকের জীবন কাহিনীও যথেষ্ট অনুপ্রেরণামূলক। তার বাবার ইচ্ছা ছিল সুরেশ বাবু বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হোক। কিন্তু সুরেশের চিন্তা ভাবনা ছিল আলাদা রকম। ছোটো থেকেই সৃজনশীল চিন্তা ভাবনার অধিকারী হলেও তার প্রথাগত ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল না। সুরেশের জীবনকে দেখার চোখ ছিল আলাদা। প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার সুরেশ তার কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর পেশা হিসাবে কৃষিকাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আর এই সুরেশ বাবুই এক অভিনব বৈজ্ঞানিক উপায় নিজের বাড়ীর পুকুরের জলকে কাজে লাগিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ‘দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি তার বাড়ির কাজ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার এই পন্থাই বেছে নিয়েছেন।
কিভাবে এই কাজ সফল করলেন তিনি। জানা যাচ্ছে মাটির নিচে প্রায় ৬০ ফুট গর্ত খনন করে তার বাড়ির পুকুরের জল থেকে বাতাসে টারবাইনে একটি পাইপ লাগিয়ে সেই থেকে বিদ্যুত শক্তি উৎপাদন করা শুরু করেছেন। কি করে এল এমন চিন্তা ভাবনা? আসলে সুরেশবাবুর এলাকায় প্রায়শঃই বিদ্যুৎ চলে যেত এবং বিদ্যুৎ বিলের টাকা পয়সা নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়েছিলেন। সুরেশ বলেন,” আমি বাড়ির বিদ্যুত যোগানের জন্য আর কারো উপর নির্ভর করতে চাইনি।
যদিও এই পদ্ধতিতে বিদ্যুত উৎপাদন করে শুধুমাত্র ছোটখাটো চাহিদাই মেটানো যাবে। যদি পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয় তাহলে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এটি ব্যবহার করা ছিলাম। আমি ছোট থেকেই প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করে কিভাবে উন্নতি করা যায় তাই চিন্তা করতাম।” নিজের বিদ্যুৎ সিস্টেম বানানোর আগে পর্যন্ত সুরেশ কর্ণাটক বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে প্রতিমাসে প্রায় ১৪০০ টাকা পর্যন্ত বিল গুনতেন কিন্তু এখন শুধুমাত্র নূন্যতম মূল্য চোকান।