হিন্দু ধর্মে অনুসারে যে কোনও শুভ কাজ শুরুর আগে ভগবান গণেশের (Lord Ganesha) পুজো করা হয়। ভগবান গণেশকে সব বাঁধা বিঘ্ন সরিয়ে দেয়, কাজ সিদ্ধ হয় তাই সিদ্ধিদাতা নামেও ভক্তরা ডাকে তাকে। এছাড়াও গজানন নাম সমেত অনেক নামেই ডাকা হয়। গজানন নামকরণের প্রধান কারণ হল, ভগবান গণেশের পুরো শরীর মানুষের মত হলেও, মাথাটা হাতির মতন। গণেশের জন্ম নিয়ে অনেক নানান মতভেদ থাকলেও পার্বতীর মনের ইচ্ছায় জন্ম নিয়েছিল গণেশ। এরপর একদিন পার্বতী গনেশকে কৈলাস পর্বতে দ্বার পাল হিসেবে নিযুক্ত করেন। গণেশ শিবকে কৈলাসে ঢুকতে এলে তাকে বাধা দেন। শিব তখন গণেশের পরিচয়ের বিষয়ে জানতেন না। অপরের পরিচয় না জেনেই যুদ্ধ শুরু হয় ২ জনের মধ্যে আর শিব গণেশের শিরচ্ছেদ করেন। পার্বতী ফিরে এসে তা দেখে প্রচণ্ড রেগে যান। পার্বতীর রাগ কম করতে মহাদেব গণেশের মাথায় এক হাতির মাথা লাগিয়ে দেন।
কিন্তু জানেন কি শিরচ্ছেদ হওয়া এই আসল মাথাটি আজও পূজা করা হয়? ভারতের এই স্থানে রাখা আছে গণেশের মাথা। উত্তরাখণ্ডে এমন একটি একটি গুহা রয়েছে যেখানে ভগবান গণেশের আসল মাথাটি নিরাপদ রাখা আছে।
উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভুবনেশ্বর গ্রাম। এই ভুবনেশ্বর গ্রামের এক মন্দিরের ভূগর্ভে রয়েছে অনেকগুলি গুহা রয়েছে। আর এই একাধিক গুহাগুলির একটি জায়গায় যোগসূত্র রয়েছে। একটি জায়গায় গিয়ে মিলিত হয়েছে সবকটি। লোককথা অনুযায়ী এই সমস্ত গুহার মিলনস্থলে যে উঁচু পাথরের ঢিবিটি রয়েছে সেটি গণেশের আসল মুন্ড।
পাতাল ভুবনেশ্বর নামে পরিচিত এই গুহা ৯০ ফুট গভীর এবং ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ধর্মপ্রাণ মানুষদের জন্য এটি একটি পবিত্র জায়গা। গুহাটির সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল ঋষি আদি শঙ্করাচার্য এর দ্বারা।
এখানে ভগবান গণেশের মাথা এই পাথর রূপে পূজিত হয়। এই গুহায় পাথর গণেশের মাথার উপর ১০৮টি পাঁপড়ির একটি ব্রহ্মকমল আছে। এই ব্রহ্মকমল থেকে গণেশের মাথার উপর জল ফোঁটা ফোঁটা আকারে পড়তে দেখা যায়। বলা হয় মাথা প্রতিস্থাপন করে হাতির মাথা লাগানোর পর ভগবান শিব নিজের হাতে এই মূর্তির স্থাপন করেন।