মানব সভ্যতার ইতিহাসে অন্যতম একটি নগর সভ্যতার নাম হরপ্পা সভ্যতা। পাঁচ হাজার বছর আগে ভারতবর্ষের সিন্ধু নদীর তীরে যে প্রাচীন সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, সেই সভ্যতাকেই সিন্ধু সভ্যতা নামে ডাকে হয়। হরপ্পা সভ্যতা এই সিন্ধু সভ্যতারই অংশ।
১৯২২ খ্রিস্টাব্দে এক বাঙালি প্রত্নতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় পৃথিবীতে তাম্র-প্রস্তর যুগের সভ্যতার এক উৎকর্ষ নিদর্শন আবিষ্কার করেন । জন মার্শালের তত্ত্বাবধানে সিন্ধু প্রদেশে লারকানা জেলায় মহেন-জো-দরোতে ( Mohenjodaro) মাটি খুঁড়ে ভারতীয় সভ্যতার কয়েক হাজার বছরের পুরনো গৌরবন্বিত ইতিহাস খুজে বার করেন। সমসাময়িক দয়ারাম সাহানি পাঞ্জাবের (বর্তমানে পাকিস্তানে) মন্টগোমারি জেলার হরপ্পায় আরেকটি নগর সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কার করেন।
এই সভ্যতা আবিষ্কারের সাথে সাথে এই হরপ্পার মানুষের জীবন যাত্রা সম্পর্কে আমরা অনেক কিছু জানতে পারি। এমনকি জানলে অবাক হবেন যে তাঁরা প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে এই জিনিসগুলো ব্যবহার করা শুরু করেছিলেন। তার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ আজও সেই জিনিসগুলো ব্যবহার করে চলেছে। তাই বলা যায়, এই জিনিসগুলোর আসল আবিষ্কারক হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীরা।
এক থেক ছয় সংখ্যা পর্যন্ত লেখা লুডোর ছক্কা হরপ্পা সভ্যতা থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে।
পোড়া মাটির তৈরি পুতুল ও খেলনা হরপ্পা সভ্যতা থেকে ব্যবহৃত হয়। এখন আমরা সেই খেলনা বা পুতুল ঘর সাজাতে ব্যবহার করি।
সাত গুটি। হরপ্পা সভ্যতার প্রধান খেলা ছিল। এখনও গ্রামে-গঞ্জে বাচ্চারা এই খেলায় মজে।
এক সময় নাম ছিল চতুরঙ্গ। এখন যা দাবা।
হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়ো, দুই সভ্যতার ধ্বংসাবশেষেই রঙ-বেরঙের বোতামের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল।
হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীরা সঠিক মাপের ব্যাপারে যত্নবান ছিলেন। তাই সেই সময় থেকেই তাঁরা স্কেল-এর ব্যবহার করতেন।
হরপ্পা সভ্যতা থেকে চলছে উনুনের ব্যবহার। আজও চলছে।
পাঁচ হাজার বছর আগেও আজকের মতোই মহিলারা বেলনা-র মাধ্যমে রুটি বা চাপাটি তৈরি করতেন।