বর্ষা আসার সপ্তাহ খানেক আগেই এই মন্দিরের ছাদ চুঁইয়ে মন্দিরের ভেতরে পড়তে থাকে ফোঁটা ফোঁটা জল। উত্তর প্রদেশের এই মন্দিরে বৃষ্টি আসার আগেই জানান দেয়। বাকি সময়ে আর কখনোই এমনটা হতে দেখা যায় না। যার কারণ আজও অজানা।
উত্তর প্রদেশের কানপুর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে একটি প্রাচীণ মন্দির। বিশ্বাস এই মন্দির প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো । মন্দিরটিতে প্রতিষ্ঠিত প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো জগন্নাথের মূর্তিতেই আজও ঈশ্বরের উপাসনা হয়। প্রাচীন এই মন্দিরটি তিনটি ভাগে তৈরী। এক ছোট্ট অংশে রয়েছে মন্দিরের গর্ভ গৃহ এবং তারপরে রয়েছে আরও দুটো অংশ রয়েছে। এই তিনটি অংশ নানা সময়ে তৈরি হয়েছে। এই মন্দিরে ভগবান বিষ্ণুরও মোট ২৪ টি অবতারের মূর্তি স্থাপন করা আছে।
এই মন্দিরটির ছাদটি পাথর দ্বারা তৈরী। আর বৃষ্টি আসার পাঁচ – সাতদিন আগে থেকেই ছাদের পাথর থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল মন্দিরে পরে। এর থেকেই বর্ষা কবে আসতে চলেছে তার একটা আগাম ধারণা প্রায় গ্রামবাসীরা। এটি কি কোনও অলৌকিক বিষয় না এর পেছনে রয়েছে বিজ্ঞান তা নিয়ে দ্বন্ধ রয়েছে। এখনও অবধি এই বিষয় বহু অনুসন্ধান চালিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। তারা একটা ধারণা করেন এই বিষয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে মন্দিরটি তৈরী করার সময় সম্ভবত মন্দিরের দেয়াল এবং ছাদ এমন কিছু দিয়ে তৈরি করা হয়েছে যে তারা বর্ষা শুরু হওয়ার আগে থেকেই সংকেত দিতে পারবে। মন্দিরটি নির্মাণ হয়েছে চুনাপাথর ব্যবহার করে। ফলে বৃষ্টির আগে যখন বায়ুমন্ডলে আর্দ্রতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, তখন চুনাপাথর বায়ুমণ্ডল থেকে আর্দ্রতা শোষণ করে। এই শোষিত আর্দ্রতা মন্দিরের দেওয়ালের পাথর পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং পাথরের গা চুইয়ে ফোঁটা ফোঁটা আকারে জল পড়তে শুরু করে। যখনই বায়ুমণ্ডলে আর্দ্রতা বৃদ্ধি পায় তখন বৃষ্টি হয়, আর আদ্রতা জনিত কারনে মন্দিরের পাথর থেকেও জল পরে। তবে অনুমান করলেও তাঁরা উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারেননি।
এই আশ্চর্য ঘটনার কারণে এই মন্দিরটিকে ‘বর্ষা মন্দির’ ও বলা হয়। মন্দিরের গর্ভগৃহের ছাদের যে পাথর থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল পরে সেই পাথরটিকে বর্ষার পাথর বলা হয়। তবে এই পাথরটি আলাদা কোনো বিশেষ প্রজাতির পাথর নয়, এটি একটি সাধারণ পাথর। এই মন্দিরে অনেকে গবেষণাও করেছেন। বেশিরভাগ গবেষণাবিদরা অনুমান করে যে এই মন্দিরটি নবম-দশম শতাব্দীরও বেশী পুরানো।