সম্পূর্ণ আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন কায়েমের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল তালিবান গোষ্ঠী। আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ন শহর মাজার-ই-শরিফের পরে পরেই পূর্ব আফগানিস্তানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ন শহর জালালাবাদ দখল করে নিল তালিবানরা। সোশ্যাল মিডিয়া মারফৎ সেই শহর দখলের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। পুরো শহরেই উড়ছে তালিবানিদের সাদা পতাকা। শহরের সবটাই যেন তাদের দখলে। যার মানে দাড়ালো এই যে, বর্তমান আফগানিস্তান সরকারের কাছে সরকারের কাছে এক কাবুল ছাড়া আর কিছুই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রইল না। আফগানিস্তানের তিনটি গুরুত্বপূর্ন শহরের মধ্যে দুটিই তালিবানের দখলে চলে যাওয়ায় তালিবানি হামলার আতঙ্কের ছায়া কাবুলের পথে ঘাটে মানুষজনের মধ্যে।
গতকাল আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি অবশ্য আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছিলেন যে তালিবানদের সঙ্গে আফগান সরকার কথা বার্তা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কথা হল আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট এর দাবী যদি সত্যিই হয় তাহলে আফগানিস্তানে এই পরিস্থিতি দাড়ালো কি করে? উঠছে প্রশ্ন। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এক ভাষণে আফগান প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, আফগান সেনাদের কাজে সকলকে কাজে ফেরাতে হবে। তাহলে কি সেটা এখনও হল না? এই সব নানা কথাবার্তা চলাকালীনই দেখা যাচ্ছে, প্রায় গোটা আফগানিস্তানই চলে গিয়েছে তালিবানদের দখলে।
বাকি রইল শুধু রাজধানী কাবুল। তবে কাবুলেও যেকোনো দিন যেকোনো মুহূর্তে উড়তে দেখা যাবে তালিবানি সাদা পতাকা। পরিস্থিতি এমনই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আফগানিস্তানের বর্তমান ক্ষমতাশীল সরকার তালিবানকে অর্ধেক ক্ষমতা ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে। প্রায় কান্না ভেজা গলায় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এক ভাষণে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি বলেন, ‘দেশের প্রধান হিসেবে আমার কাজই হল এই গভীর সংকটের মুহূর্তে দেশবাসীকে রক্ষা করা। দেশ ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। আমি রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে নানা পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে একটা সমাধানের পথ খুঁজছি। আন্তর্জাতিক নানা মহলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি।’
যদিও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেনা সরিয়ে নিলেই এখনও প্রায় এক হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে কাবুলে নিরাপত্তার খাতিরে। তবু কাবুল শহরের বাসিন্দারা এবং সেখানে আশ্রয় নেওয়া বাকি আফগানিস্তানের লাখ লাখ শরণার্থীর এই মুহূর্তে আতঙ্কে কাঁপছে।দেশের বেশিরভাগ জায়গার দখল তালিবানের হাতে চলে যাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন আফগান মহিলা এবং কাবুলের বাসিন্দারাও।