আর কোনও লুকোছাপা নয়। এ বার সরাসরি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে গেলো রাজ্য সরকার।
রাজ্যপালের অপসারণ চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এই দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি পাঠাবেন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে। শুধু তাই নয়, বিধানসভায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের অপসারণের দাবিতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও ভেবে রেখেছেন শাসক দল।
জগদীপ ধনখড় ও শাসক দলের মধ্যে মত বিরোধ নতুন কিছু নয়। রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকেই বারং বার ধনখড় এবং রাজ্য সরকার সংঘাত বেধেছে। মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল মত বিরোধ হয়েছে বারবার। এর আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজধানী তে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে রাজ্যপালকে ‘কার্যকলাপ’ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে এসেছিলেন। সাথে সাথে তার প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ ছিল, ‘রাজ্যপালকে সংযত হতে বলুন।’
কিন্তু সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটের আগে থেকে রাজ্যপাল ও শাসক দলের সংঘাত বড় আকার নেয়। রাজ্যপাল রোজই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে টুইটারে সরব হয় । পাল্টা তাঁকেও ‘বিজেপির লোক’ বলে সমালোচনায় ।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে শপথ নেওয়ার দিনও নির্বাচন পরবর্তী হিংসার কথা তুলে রাজ্যপাল মমতা কে খোঁচা দেন। উত্তর দেন মমতাও। একই ভাবে খোঁচা দেন বাকি মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণের দিনেও। রাজনৈতীক বিশ্লেষক দের মতে যা হলো ওই ধরনের অনুষ্ঠানে নজিরবিহীন। এই মত বিরোধ আরো বারে যখন কোভিড পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি পাত্তা না দিয়ে তিনি বিজেপি নেতাদের সাথে করে শিতলকুচিতে ‘সন্ত্রাস’ দেখতে বেরিয়ে পড়েন।এর পর গতকাল দুই মন্ত্রী এবং এক তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে সিবিআইকে সম্মতি দেন রাজ্যপাল।
সোমবার সকালে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতার করে সিবিআই। এই ঘটনা কেন্দ্র করে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে, রাজভবনের গেটে এবং বিভিন্ন জেলায় তৃনমূলের বিক্ষোভ তুমুল আকৃতি নিয়েছিল। সোমবারও রাজ্যপাল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে টুইট করেন। মুখ্যমন্ত্রী যখন নিজাম প্যালেসে উপস্থিত ছিলেন সেখানে রাজ্যপালের ফোন আসে। তখনও মুখ্যমন্ত্রী কঠোর ভাবে রাজ্যপালকে কিছু কথা বলেন। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী অনেক রাজ্যপাল পদ থেকে সরানোর দাবি নিয়ে সরকার ও শাসক দল তরফে সরব হন। তার জন্যই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি, এর পর বিধানসভাতেও রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে প্রস্তাব করবে শাসক দল। এমনকি রাজ্যপালকে ‘বয়কট’ করার ডাকও দেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।