কল্প বিজ্ঞানের গল্পে যা হয় মানুষ কি তা করতে পারে? অনেক সময় নানা কল্প বিজ্ঞানের গল্পে বা ফিকশনাল গল্পে (fictional stories) এ আমরা আমরা দেখেছি, পরিস্থিতি প্রতিকুল হলে হলে জেমস বন্ড হোক কি ব্যাটম্যান গাড়ি সামনের বা পেছনের ডিকি খুলে চলতে থাকে গুলি, আকাশেও উড়তে পারে গাড়ি। শত্রুর চোখে ধুলো দিয়ে যেমন ভ্যানিশ হয়ে যায় গাড়ি তেমনই শত্রুকে তাড়া করে মাটি থেকে আকাশ, জল থেকে আকাশে সর্বত্র। তবে গাড়ি কি শুধুই উড়তে পারে কল্প বিজ্ঞানের পাতায়। এবং প্রশ্ন ওঠে, কল্পনা যা পারে, মানুষ কি তা পারে?
সম্প্রতি এমন অবিশ্বাস্য ঘটনাই সম্ভব হয়েছে। পূর্ব ইউরোপের দেশ স্লোভাকিয়ার দুই বিজ্ঞানী প্রফেসর স্টেফান ক্লেইন এবং তাঁর সহকারী অ্যান্টন জেজাক নিজেদের উদ্ভাবনী কৌশল আর প্রযুক্তিগত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে তৈরি করে ফেলেছেন এমন এক গাড়ি, যা দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করা যাবে না। এই দুজনে মিলে তৈরি ফেলেছেন এমন আশ্চর্য যান, যা শহরের রাস্তায় যেমন গড়গড়িয়ে দিব্যি চলতে সক্ষম, তেমনই আকাশ পথেও উড়তে পারে অনায়াসে। অর্থাৎ কিনা একাধারে চারচাকা সাধারণ গাড়ি, আবার উড়োজাহাজও। এর নাম রাখা হয়েছে এয়ারকার। বাংলায় অনুবাদ করলে এর অর্থ দাঁড়ায় বিমান-গাড়ি। এই এয়ারকার প্রস্তুতকারী দুই বিজ্ঞানী জানিয়েছে, পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্বালানি গাড়িতে ভরা থাকলে এই এয়ারকার বা বিমান-গাড়ি মাটিতে আর বাকি চারচাকার মতোই টানা পারি দিতে পারে কয়েক হাজার কিলোমিটার চলতে পারে, এইসঙ্গে একবারে ডিঙোতে পারে এক হাজার কিলোমিটার আকাশ। কীভাবে তৈরি হয়েছে বিমান-গাড়ি?
এই অভিনব যানে দেওয়া হয়েছে ১৬০ হর্সপাওয়ারের বিএমডব্লিউ ইঞ্জিন। পাশে জোড়া হয়েছে দুটি ডানা এবং রয়েছে একটি প্রপেলার। এখনও পর্যন্ত এই বিমান গাড়ি সর্বোচ্চ ৮ হাজার ২০০ ফুট উচ্চতায় উড়েছে। সর্বোচ্চ গতিবেগ ছুঁয়েছে ১৯০ কিমি প্রতি ঘণ্টা। অভিনব এই গাড়িতে একসাথে বসতে পারে দু’জন। ২০০ কেজি ওজনের মালও বহন করতে সক্ষম। এখনও পর্যন্ত ৪০ ঘণ্টা উড়ান দিয়েছে বিমান-গাড়ি । তবে কি-না এই আবিষ্কার সবচেয়ে অবাক করেছে যখন এই যানের গাড়ি থেকে বিমানের পরিবর্তন হয়। একটি সুইচ টিপতেই কাণ্ড ঘটে। গাড়ির পাশে গুটিয়ে রাখা দুই বিমানের ডানা খুলে যায় গাড়ির দু’পাশে। ঘুড়তে শুরু করে যানটির পেছনে লাগানো প্রপেলার। চোখের সামনে মাটি ছেড়ে আকাশ ছোঁয় কল্পবিজ্ঞান। রাস্তার গাড়ি উড়তে থাকে আকাশে।