মা দূর্গা কে দশভুজা বলা হয়, তার কারণ মা দূর্গা দশহাতের অধিকারিণী। কিন্তু এই দশভুজার প্রত্যেকটি হাত কিন্তু স্বাভাবিক হাতের যা মাপ হয় তার তুলনায় ছোট! নরসিংহ বাহন হিসেবে থাকে সিংহের বদলে! লক্ষী সরস্বতীর জায়গা হলেও তাদের বাহন দের জায়গা হয়না মায়ের সাথে। হ্যাঁ বাকি পুজো গুলোর থেকে বীরভূমের কীর্ণাহারের সরকার বাড়ির পুজো অনেকটাই আলাদা, যা স্থানীয় লোকজনের কাছে ‘ছোট হাতের দুর্গা’ নামেই পরিচিত। সরকার বাড়ির এই দূর্গা পুজো মোটামুটি ৩৫০ বছর পুরোনো।
সরকার বংশের পূর্বপুরুষ কিশোর কুমার সরকারের হাত ধরে দীর্ঘ ৩৫০ বছর আগে ছোট হাতের দুর্গার প্রচলন হয়েছিল। যেহেতু চামুণ্ডা রূপে এখানে দেবী পূজিত হন, তাই দেবীর এখানে দুটি হাত বড় ও কাল্পনিক মনে করা হয় বাকি আটটি হাতকে।
পাশাপাশি এখনও পুজোর প্রচলন রয়েছে তালপাতার পুঁথি দেখে। শুধুমাত্র মায়ের হাতের বিশেষত্বই নয় বিশেষত্ব আছে কীর্নাহারের সরকার বাড়ির দেবীর একচালাতেও। কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী ও মহিষাসুর একই কাঠামোয় থাকলেও এখানে শুধু কার্তিকের বাহন ময়ূর দেখা যায়, তাছাড়া এখানে দেখা যায় না লক্ষী বা সরস্বতীর বাহনকে। এখানে সিংহের পরিবর্তে নরসিংহকে দেখা যায়।
রাজা সরকার সরকার বংশের এগারোতম বংশধর জানান, প্রতিপদের দিন থেকেই অর্থাৎ মহালয়ার পরদিন ঘট পূজার মধ্য দিয়ে এখানে শুরু হয়ে যায় দুর্গাপুজো। সঙ্গে এখানকার পুজোর আরও এক বৈশিষ্ট্য হল এখানে হোম-যজ্ঞ শুরু করা হয় সপ্তমীর দিন থেকেই, আর দশমী অবধি সেই হোমের আগুন জ্বলতে থাকে। অর্থাৎ প্রতিদিন চলে হোম-যজ্ঞ হোমের আগুন জাগিয়ে রেখে। এবারেও ছোট হাতের দুর্গার পুজোয় মেতে ওঠার প্রস্তুতিতে মগ্ন কীর্নাহারের সরকার বাড়ি নিজস্ব রীতিনীতিতে ভর করে।